ইরানে এক বছরে ৬৭০ জনের মৃত্যুদণ্ড

ইরানে এক বছরে ৬৭০ জনের মৃত্যুদণ্ড

ইরানে ২০১১ সালে ৬৭০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এদের অধিকাংশেরই দণ্ড হয়েছে মাদক সংক্রান্ত অপরাধের কারণে।

অবশ্য মাদক সম্পৃক্ততা দেখিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত অনেককেই সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। দণ্ডিতদের আন্তত ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য।

জাতিসংঘ নিযুক্ত ইরান বিষয়ক তদন্তকারী মালদ্বীপের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ শাহেদ সোমবার এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ইরান বৃহত্তর পরিসরে জাতিসংঘের মানবাধিকার আইন লঙ্ঘণ করছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সমকামীদের দমন-পীড়ন এবং শ্রমিক ইউনিয়ন মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

গত বছর আহমেদ শাহেদকে তদন্তকর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে তিনি তার প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তবে তার এই প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান।

প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে শাহেদ মানবাধিকার কাউন্সিলকে বলেন, “ইরানে উদ্বেগজনকভাবে মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা বেড়েছে। যেখানে ২০১১ সালের মধ্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২শ’ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় সেখানে বছর শেষে এই সংখ্যা গিয়ে ঠেকে ৬শ’রও বেশি।

শাহেদের প্রতিবেদনে ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারিভাবে ৪২১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা বিস্তারিত রয়েছে। কিন্তু বাকি ২৪৯ জনের মৃত্যুদণ্ড গোপনে কার্যকর করা হয়। এই অঘোষিত মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য তিনি ইরানের অভ্যন্তর ও বাইরে থেকে সংগ্রহ করেছেন।

গত বছর ইরানে তদন্তের ব্যাপারে সীমিত ভোটের ব্যবধানে কর্তৃত্ব পান আহমেদ শাহেদ। এ ব্যাপারে তাকে পশ্চিমা ও ল্যাতিন আমেরিকা এবং বেশ কয়েকটি আফ্রিকার দেশ সমর্থন দিলেও কিউবা, রাশিয়া, চীন এবং আরো বেশকিছু দেশ এর বিরোধিতা করে।

আহমেদ শাহেদকে ইরানে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি দেশটির সরকার। সোমবার তাকে ‘অদক্ষ’ আখ্যা দিয়েছে ইরান।

দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আহমেদ শাহেদ মালদ্বীপে একটি মানবাধিকার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, ইরানে সরকারি বাহিনীর অত্যাচারের প্রত্যক্ষদর্শীসহ জেলে আটক তরুণদের আত্মীয়দের জবানবন্দি তিনি ভিডিওটেপে ধারণ করেছেন।

শাহেদ দাবি করেন, যদিও মাদক সম্পর্কিত অপরাধের কারণে অনেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এর পেছনে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ততার জোড় ভিত্তিও রয়েছে। কেননা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদে অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সরকারবিরোধী আন্দোলনের কারণে।

আন্তর্জাতিক