আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে দূরে সরাতে ক্রিকেট বিশ্বের ২ পরাশক্তি ও সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ান পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সব ষড়যন্ত্র ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-১ এ সমতা আনার পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা শতভাগই নিশ্চিত হলো টাইগারদের। ক্রিকেট বোদ্ধাদের ধারনা- পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এখন নিজেদের হাত কামড়াচ্ছে! তাদের এখন মনে হতেই পারে- কী দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের সাথের আসন্ন সিরিজটাকে ত্রিদেশীয় সিরিজ বানানোর? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার পথে যে ক্ষণিকের বন্ধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে তাদের জন্যই। যাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা আটকানোর জন্য এত আয়োজন সে বাংলাদেশ নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই গড়ে নিল। দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের অংশ গ্রহণ এখন যেন এক বাস্তব ঘটনাই বানিয়ে নিলো মাশরাফিরা।
অবশ্য এ সিরিজ শুরুর আগেই একটা সমীকরণ ছিল বাংলাদেশের সামনে। কেবল একটা ম্যাচ জিতলেই বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা নিশ্চিত। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনায়াস জয়ে বাংলাদেশ নিশ্চিত করে ফেলল ২০১৭ সালের ইংল্যান্ড যাত্রা। আগামী ২০১৯ বিশ্বকাপও ইংল্যান্ডে। এ টুর্নামেন্ট খেলা বাংলাদেশের জন্য তাই বিরাট এক সুযোগ। শুধু অভিজ্ঞতায় নয়, রেটিং পয়েন্ট বাড়িয়ে আগামী বিশ্বকাপে সরাসরি খেলারও।
চলতি সিরিজে ম্যাচ বাকি আছে আরও একটি। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ নিশ্চিত করল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে যাই ঘটুক না কেন, বাংলাদেশের ওয়ানডে রেটিং ৯৩ এর নিচে নামছে না। আর সাথে সাথে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার ইঁদুর-দৌড়ে বাংলাদেশ চলে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের আওতার বাইরে। এখন পাকিস্তান নিশ্চয় চাইবে শ্রীলঙ্কার সাথে সিরিজটা সর্বোচ্চ ব্যবধানে জিততে। কারণ জিম্বাবুয়েতে শুরু হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি সবগুলো ম্যাচে জেতে উল্টো বিপদে পড়ে যাবে পাকিস্তানই। ‘খাল কেটে কুমির নয় যেন হাঙর আনা’র এত চমৎকার উদাহরণ নিশ্চয় হতে চাইবে না পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড!
যদিও মাশরাফি বলেছেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই, কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবার কাছেই কিন্তু হালকা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল এ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই। ক্রিকেট খেলাটাকে ক্রমশ সংকুচিত করতে চাওয়া আইসিসির পরিকল্পনার বিরুদ্ধে একটা জোরালো জবাব বাংলাদেশের এ জয়। ক্রিকেটের ৩ মোড়ল, বিশ্বকাপে মাত্র ১০ দেশের খেলা সব মিলিয়ে ক্রিকেটে হয়ে উঠছে শুধুমাত্র তথাকথিত বড় দলগুলোর সম্পত্তি। ৮ দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এখন নিশ্চিতভাবেই আইসিসির এ সব বড় দলগুলোর দাবিকে অসাড় প্রমাণ করবে। এখন বাংলাদেশের সামনে শুধু পরের বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ!