জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের আমুট্ট রেলক্রসিং দুর্ঘটনার পর কেটে গেছে নয় বছর। কিন্তু যে কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে-সেই রেলগেট নির্মিত হয়নি এত বছরেও। ফলে অরক্ষিতই থেকে গেছে সেই রেলক্রসিং।
২০০৬ সালের ১১ জুলাই জেলার জয়পুরহাট-সান্তাহার সড়কের আক্কেলপুরের আমুট্ট রেলক্রসিংয়ে আন্তনগর ট্রেন রূপসা ও একটি বাসের সংঘর্ষে ৩৫ জন প্রাণ হারায়। গুরুতর আহত হন অন্তত ৪০ জন।
এরপর গঠিত তদন্ত কমিটি রেলক্রসিং না থাকা আর বাসচালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোকে ওই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। কিন্তু এরপরও রেলগেট নির্মিত না হওয়ায় প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে শত শত যানবাহন আর যাত্রীদের।
কেবল আক্কেলপুরের আমুট্ট রেলক্রসিংই নয়, জেলায় প্রায় ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইনে আছে আরো ১৯টি অরক্ষিত রেলক্রসিং। প্রয়োজনীয় রেলগেট নির্মিত না হওয়ায় এসব রেলক্রসিং কার্যত মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
নিরাপদে এসব ক্রসিং পারাপারে প্রয়োজনীয় রেলগেট নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী ও পরিবহণ শ্রমিক-মালিকদের দাবি বরাবরই থেকেছে উপেক্ষিত।
এ বিষয়ে সড়ক বিভাগের অবহেলা ও গাফিলতিকে দায়ী করে রেল কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ, রেলের কোনো অনুমতি ছাড়াই চলছে আমুট্ট রেলক্রসিং। দুর্ঘটনাটির আগে প্রাক্কলন ব্যয়সহ একাধিকবার সড়ক বিভাগকে ওই রেলক্রসিংয়ে গেট নির্মাণের চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি।
জয়পুরহাট আক্কেলপুর রেলস্টেশনের মাস্টার খাদিজা খাতুন বলেন, “আক্কেলপুর উপজেলার আমুট্ট এলাকায় রেলক্রসিংয়ে সড়ক বিভাগ যে রাস্তা পারাপারের ব্যবস্থা করেছে, তা রেল বিভাগের অনুমতি ছাড়া।”
এদিকে গেট নির্মাণে রেল বিভাগের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রেল বিভাগের দেয়া চিঠি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে, বরাদ্দ পেলে গেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী বুলবুল ইসলাম বলেন, “২০০৭ সালে রেল বিভাগের কাছ থেকে রেলগেট নির্মাণের জন্য আমরা ৬০ লাখ টাকার একটি প্রাক্কলন পেয়েছি, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।”