ক্রিকেটে ম্যাচ পাতাতে জুড়ি নেই ভারতীয় বাজিকরদের। ফিক্সিংয়ের টোপ গেলাতে ক্রিকেটারদের শুধু অর্থই নয় বলিউড নায়িকাদেরও ব্যবহার করে এই চক্র। ফিক্সিংয়ে জড়িতদের কারাবাসের নজির থাকলেও কোনো কিছুই ভারতীয় বুকিদের দমাতে পারছে না। সম্প্রতি ব্রিটেনের সানডে টাইমসের এক ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টে বুকিদের দৌরাত্ম থামাতে আইসিসির সক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
পত্রিকায় ম্যাচ পাতানোর কোনো অভিযোগ উঠলেই সেটা নিয়ে তদন্তের নিয়মিত আশ্বাস দিয়ে আসছে আইসিসি। কিন্তু বিশ্বব্যাপী ম্যাচ পাতানো ঠেকাতে তাদের ভূমিকা ও সামর্থ্য এরই মধ্যে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বেপরোয়া বুকিদের নাগালে কি নেই। বিশ্বকাপ থেকে আইপিএল, বিপিএল থেকে কাউন্টি ক্রিকেট এবং আন্তর্জাতিক টেস্ট ও ওয়ানডে সবকিছুইতেই থাবা বিস্তার করেছে ভারতীয় অবৈধ জুয়াড়ী চক্র।
সানডে টাইমসের কাছে এমনি এক ভারতীয় বুকি সগর্বেই জানিয়েছেন তিনি এবং তার সহযোগীরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তেই ম্যাচ পাতাতে সক্ষম। তবে কোনো বিশেষ খেলোয়াড় ও বিশেষ ম্যাচের নাম উল্লেখ করেনি ওই বুকি। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন গতবছর বিশ্বকাপের শেষদিকের একটি ম্যাচও ছিল পাতানো। তবে এই গুজবকে সত্যতা দিতে কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারেননি।
তবে সবচাইতে বিস্ময়কর যে তথ্যটি ভারতীয় বাজিকর দিয়েছেন সেটি হল ম্যাচ পাতানোতে অংশ নিতে ক্রিকেটারদের জন্য টোপ হিসেবে বলিউড নায়িকাদেরও কাজে লাগাচ্ছেন বুকিরা। এই পথটি নিরাপদও বটে। কারণ খেলোয়াড়রা কোনো অপরিচিত ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে সেটা সন্দেহের চোখে দেখা হয়। কিন্তু সফরে বা ম্যাচ চলাকালে সুন্দরী নারীরা ক্রিকেটারদের অনুসরণ করলে ও কথা বললে কেউ সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখেন না।
সম্প্রতি স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে পাকিস্তানী তিন ক্রিকেটার সালমান বাট, মোহাম্মদ আমির ও মোহাম্মদ আসিফ ইংল্যান্ডে জেল খেটেছেন। এছাড়া কাউন্টি ক্রিকেটে ম্যাচ পাতানোর দায়ে প্রথমবারের মতো মারিভন ওয়েস্টফিল্ড নামক ইংলিশ ক্রিকেটারকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ব্রিটিশ আদালত। একই সঙ্গে ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত থাকার অপবাদ দেওয়ায় লন্ডন হাইকোর্টে আইপিএলের সাবেক কমিশনার লোলিত মোদির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা লড়ছেন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার ক্রিস কেয়ার্নস।
সানডে টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়েছে ওই বাজিকর দাবি করেছেন ম্যাচ পাতাতে লাখ লাখ ডলার ব্যয় করা হয়। সাধারণত কম রান করার জন্য কোনো ব্যাটসম্যানকে ৭০ হাজার ডলার এবং বেশি রান হতে বোলারকে ৮০ হাজার ডলার দেওয়া হয়। এছাড়া ম্যাচের ফলাফল আগাম বলতে পারলে ক্রিকেটার বা দলের কর্মকর্তাদের দেওয়া হয় প্রায় ১.২ মিলিয়ন ডলার।