তাজরীন গার্মেন্টসের অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক নিহতের মামলায় প্রতিষ্ঠাটির মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ১৩ আগস্ট ধার্য করেছে আদালত।
বুধবার আসামি পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী না থাকায় ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৩ আগস্ট চার্জ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেন।
শুনানিকালে আসামি দেলোয়ার ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার মাহমুদা আক্তার প্রতিষ্ঠানটির লোডার শামীম, স্টোর ইনচার্জ (সুতা) আল আমিন, সিকিউরিটি ইনচার্জ আনিসুর রহমান, সিকিউরিটি সুপার ভাইজার আল আমিন, স্টোর ইসচার্জ হামিদুল ইসলাম লাভলু ও অ্যাডমিন অফিসার দুলাল উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলাটির আসামি সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনোয়ারুল, প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, প্রডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জুর ও শহীদুজ্জামান দুলাল পলাতক রয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর সিআইডির পুলিশের ইন্সপেক্টর একেএম মহসীনুজ্জামন ১৩ জনের বিরুদ্ধে অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে দ-বিধির ৩০৪-(ক) ধারায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
ভবনটির নকশায় ত্রুটি ও জরুরি নির্গমনের পথ না থাকায় এবং আগুন লাগার পর শ্রমিকরা বাইরে বের হতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা আগ্নিকাণ্ডকে অগ্নিনির্বাপন মহড়া বলে শ্রমিকদের কাজে ফেরত পাঠিয়ে কলাপসিবল গেট লাগিয়ে দেয় বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর ওই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ১১১ জন পোশাক শ্রমিককর্মী নির্মমভাবে নিহত হন। আহত হন ১০৪ জন শ্রমিক।
গার্মেন্টসটিতে এক হাজার ১৬৩ জন শ্রমিক কাজ করতেন কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ৯৮৪ জন শ্রমিক সেখানে কর্মরত ছিলেন। নিহত ১১১ জনের মধ্যে তৃতীয় তলায় ৬৯ জন, চতুর্থ তলায় ২১ জন, পঞ্চম তলায় ১০ জন, পরবর্তীতে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা যান ১১ জন। লাশ সনাক্ত হওয়ায় ৫৮ জনকে তাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি ৫৩ জনের লাখ সনাক্ত না হওয়ায় তাদের অসনাক্ত অবস্থায় জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ঘটনাটি ঘটার পর পুলিশ একটি মামলা করে। এরপর ২০১৩ সালের ২৯ মে ওই ঘটনায় নিহত রেহানা বেগমের ভাই আব্দুল মতিন আদালতে একটি একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাত ২০/৩০ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলাটি আদালত তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিল।
ওই মামলায় বলা হয়েছিল- ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যেয় অজ্ঞাতনামা দৃষ্কৃতিকারীরা আগুন লাগিয়া দেয়। ওই ঘটনায় ১১১ জন পোশাক শ্রমিককর্মী নির্মমভাবে নিহত হন। আগুন লাগার পর নিহত রেহানা বাদীর ফোনে জানায় চার তলায় কলাপসিবল গেট তালা দেয়া থাকা সে বের হতে পারছে না।
মামলায় আরো বলা হয়, তাজরীন গার্মেন্টসের মালিক দেলোয়ার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার নির্দেশে অজ্ঞাত অন্য আসামিরা কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে বাদীর বোনসহ ১১১ জন শ্রমীককে হত্যা করে।