অপহরণের পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক আবদুর রাজ্জাককে ইয়াবা ব্যবসায় সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছিল মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)।
ইয়াবা পাচারে বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতা চেয়ে রাজ্জাককে মোটা অংকের টাকা দেওয়ারও প্রস্তাব করে বিজিপি। তবে সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নিয়মিত নির্যাতন করা হয় রাজ্জাককে।
এসব তথ্য জানিয়েছেন বিজিবি টেকনাফের ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ। দেশে ফিরিয়ে আনার পর রাজ্জাক তার অধিনায়ককে এসব কথা জানান। বর্ণনা দেন বিজিপি সদস্যদের নির্যাতন আর নির্যাতনের কারণ।
প্রসঙ্গত, ১৭ জুন বুধবার টেকনাফের নাফ নদীর জাদিমুরা পয়েন্ট সীমান্ত এলাকায় টহলের সময় আবদুর রাজ্জাককে অপহরণ করে বিজিপি। সেখানে তাকে শারীরিক নির্যাতনের পর নিজেদের ফেসবুক পেজে রাজ্জাকের ছবি আপলোড করে বিজিপির সদস্যরা।
আবু জার আল জাহিদ বলেন, প্রথমে রাজ্জাককে অপহরণের পর নিজেদের শিবিরে নিয়ে যায় বিজিপি। এরপর শুরু হয় প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। এক পর্যায়ে তারা রাজ্জাককে জিজ্ঞেস করে, কি কারণে বিজিবি সীমান্তে ইয়াবা প্রবেশ করতে দেয় না ? কেন এত ইয়াবা ধরাধরি করো তোমরা? টহল বন্ধ করে সীমান্তে ইয়াবা ছেড়ে দেয়ার কথাও বলে তারা।
ইয়াবা পাচারে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করলে তাকে মোটা অংকের টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও করে বিজিপি সদস্যরা। রাজ্জাক রাজি না হওয়ায় তাকে লাঠি দিয়ে নির্যাতন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিজিবি সদস্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত করার উদ্দেশ্যেই রাজ্জাককে অপহরণ ও নির্যাতন করে বিজিপি। বিজিপি সাহায্য না করলে কি পরিনতি হবে এর নিদর্শন হিসেবে রাজ্জাককে নির্যাতনের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিজিবির অধিনায়ক বলেন, নায়েক রাজ্জাককে নয়, বিজিবির হাবিলদার লুৎফরকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল বিজিপি। কারণ হাবিলদার লুৎফর গত এক বছরে ওই এলাকায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ইয়াবা উদ্ধার করেছেন। এর স্বীকৃতি হিসেবে তাকে দুইবার পুরস্কারও দেয় বিজিবি।
তবে বিজিবি কখনো বাংলাদেশর গায়ে ইয়াবার কলংক লাগতে দেবে না। যুবসমাজকে ইয়াবার থাবা থেকে দূরে রাখতে বিজিবির টহল আরো জোরদার করা হবে বলে জানান আবু জাল আল জাহিদ।