প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট আসছেন ২৪ মার্চ। তার আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। সম্প্রতি ঘরোয়া পরিবেশে সিলেট মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা দু’টি বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দাবীদাওয়া ঠিক করেছেন তারা। শিগগিরই শেখ হাসিনার কাছে এ দাবীগুলো পাঠানো হবে। সিলেটে আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে শেখা হাসিনার বক্তব্যে এসব দাবীর বাস্তবায়ন চান আওয়ামী লীগ নেতারা।
সিলেট মহাগনর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘বেশকিছু দাবীদাওয়া খসড়া তৈরি করা হয়েছে।’
খসড়া দাবীদাওয়া কি কি বিষয় থাকছে এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি জানান, ‘সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে ‘বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরে ঘোষণা, সদর হাসপাতালকে বিশেষায়িত (শিশু) হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা, আখাউড়া-সিলেট রেললাইন সংস্কার, সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন, ওসামানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপদান ও বিমনের রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপন, সিলেটে স্পেশাল ইকোনোমকি জোন স্থাপন, সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ড্রেজিং করা এসব বিষয় খসড়াতে আছে।’
আরো দু’একদিনের মধ্যে এ দাবীগুলো চূড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
তবে এসব দাবীর মধ্যে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে ‘বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরে ঘোষণা দেওয়ার দাবীটি জোর দিয়েই থাকছে বলে দলীয় অন্যন্য সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বর্তমানে শিক্ষক সঙ্ককের কারণে এক ধরণের অচলাবস্থায় রয়েছে। পর্যাপ্ত ভবন, যন্ত্রপাতি ও শিক্ষার্থী থাকার পর পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে সেখানে।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ মার্চ সকাল ১০ টায় হেলিকপ্টারযোগে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় আসবেন। ফেঞ্চুগঞ্জ পৌঁছেই তিনি উপজেলার নিজামপুর এলাকায় দেশের বৃহৎ সার কারখানা শাহজালাল ফারটিলাইজার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন।
শাহাজালাল সার কারখানা সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই প্রকল্পের কাজে ব্যয় হবে ৫ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। কারখানাটি নির্মিত হলে প্রতিদিন ১ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন করে বার্ষিক ৫ লাখ ৮০ হাজার ৮শ মেট্রিক টন ইউরিয়া এবং প্রতিদিন ১ হাজার মেট্রিক টন হিসাবে বছরে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন অ্যামনিয়া সার উৎপাদিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শাহজালাল সার কারখানা নির্মাণের জন্য সম্প্রতি চীন এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সরকার এবং চীনের এক্সিম ব্যাংক মোট ব্যয়ের ৭০ শতাংশ ঋণ দেবে। যা প্রায় ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ১ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেবে।
সার কারখানার নির্মাণকাজের উদ্বোধন করার পর সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী একই উপজেলার পারুলীকোনায় ফেঞ্চুগঞ্জ ৯০ মেগাওয়াট সিসিবিপি পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধন করবেন। এ প্ল্যান্ট নির্মাণে ব্যয়ে হয়েছে ৫২৪ কোটি টাকা। গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে ওই ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
এরপর বেলা সোয়া ১১টায় সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ের ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৮৭৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
দুপুর পৌনে ১২ টায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১২ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন শেখ হাসিনা। এতে ব্যয় হবে ১০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
এরপর প্রধানমন্ত্রী বিকেল ৩টায় নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন।