অবশেষে পথ খুঁজে পেলো বাংলায় ওয়েব সাইটের ঠিকানা লিখে ইন্টারনেটে প্রবেশের পদ্ধতি বাংলা ডোমেইন বা টপ লেভেল কান্ট্রিডোমেইন (টিএলসিডি)। আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে তিন বছর ধরে ঝুলে থাকা ডটবাংলা ডোমেইন।
বিটিআরসি-বিটিসিএল ঠেলাঠেলি শেষে রোববার ডটবাংলার ডোমেইনের দায়িত্ব বিটিসিএলকে দেয়া হয়েছে। ডোমেইনটি কার্যকর করতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ডিএনএস সার্ভার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, শিগগিরই ডিএনসিসি’র পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে বিটিসিএল ডটবাংলা বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে সুনির্দিষ্ট জবাব দেবে। ঈদের আগেই বা ঈদের পরপরই ডিএনসিসি’র পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আগামী মাস নাগাদ চালু হতে পারে দ্বিধাদ্বন্দের অবসান ঘটবে।
এদিকে আগেই কান্ট্রি কোড টপ-লেভেল ডোমেইনের জন্য বাংলাদেশে সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটউটের মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস) রেজাউল কাদেরের নাম প্রকাশ করে ডোমেইন ব্যবহারের স্বীকৃতি দেয়া আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট করপোরেশন অব অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নাম্বারস (আইক্যান)।
এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার বলেছেন, ‘ইন্টারনেটে আমার জাতীয় পরিচয় ‘ডোমেইন’ হারানোর খবরটি জানার পরই আমি গত বুধবার সংশ্লিম্নষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলি। টেলিকম বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পারি ডোমেইন উদ্ধারে তারা তৎপর হয়েছেন। সর্বশেষ রোববার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ডমেস্টিক নেটওয়ার্কিং কো-অর্ডিনেশন কমিটির (ডিএনসিসি) সভায় বিটিসিএলকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এখন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ডটবাংলা’র জন্য একটি ডিএনএস সার্ভার স্থাপন করা হবে।
ইন্টারনেট জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডোমেইন (ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেম-আইডিএন) ডট বাংলা গত তিন বছরে কার্যকর করতে না পারায় সম্প্রতি ডোমেইনটি অনর্পিত তালিকায় সরিয়ে রাখে আইক্যান।
এ পর্যায়ে বিডিনগ সভাপতি নরুল ইসলাম রোমান আইকানের বরাত দিয়ে জানান, বাংলা ডোমেইন এখনো বাংলাদেশের নামেই আছে। তবে ডিএনএস ডেলিগেশন দ্রুত করতে হবে। এর প্রাইমারি স্ট্রিং-এক্সএন-৫৪ন৭ভঃধ০পপ বাংলা।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের মহাসচিব এম এ হক অনু জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্টদের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে ফাইলটি দীর্ঘদিন ধরে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থায় আটকে থাকায় ডটবাংলা এতোদিন ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। এবার পথ খুঁজে পেলো। তবে বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।
২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আবেদনের পর ২০১১ সালে আইডিএন লেখার ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন এবং পরের বছর ইন্টারনেট অ্যাসাইনড নাম্বারস অথোরিটির (আইএএনএ) অনুমোদন পায় । কিন্তু বাস্তবায়নকারী সংস্থা নির্ধারণ করতেই কেটে গোলো তিন বছর।
এর মধ্যে গত ১৯ মে জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে দেখা করে ডট বাংলার গুরুত্ব, অনলাইনে বাংলার অবস্থান, বাণিজ্যিক বিষয়ে গুরত্বরোপ করেছিলেন আইকানের পরিচালক (সিকিউরিটি ও সার্ভেইলেন্স) জন এল ক্রেইন ও এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনের পার্টনার এনগেইজমেন্ট ম্যানেজার চম্পিকা বিজয়েতুঙ্গা। বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক অপারেটরর্স গ্রুপের (বিডিনগ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাবির ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন। মূলত ওই বৈঠকের পরই ডটবাংলা বাস্তবায়নের গতি পায়। মন্ত্রণালয়, বিটিসিএল ও বিটিআরিসি’র প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়।