শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইনডোরের পাশে যেখানে ব্যাটে-বলে অনুশীলন করছিলেন ক্রিকেটাররা, সেখানে গিয়ে বসলেন এনায়েত হোসেন সিরাজ। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার সাব্বির খান হাক দিলেন তামিমের উদ্দেশে। পাশাপাশি তিনটা চেয়ারে উনারা বসে আলোচনাটা পারলেন। মুচলেকা দিতে হবে! তামিমও বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাইলেন ওটার আবার কি প্রয়োজন। আমি তো বোর্ডের চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটার। ক্রিকেট খেলতে হলে সমস্ত নিয়মকানুন তো মানতেই হবে।
ঠিকই তো, চুক্তিতে থাকলে তাকে তো আলাদা করে মুচলেকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই এনায়েত হোসেন আর কোন কথা খুঁজে পেলেন না। যা একটু চাপাচাপি করতেন সাংবাদিকরা তাও হতে দিলেন না। একসঙ্গে হাজির হলেন এনায়েত হোসেনের সামনে। এরপর প্রশ্নের মুখে তিনি নিজেই বলেন, ‘সমস্যা বাড়িয়ে লাভ নেই। কোন মুচলেকা নিচ্ছি না। ও (তামিম) ভালো মতো এশিয়া কাপ খেললে তাতেই আমরা খুশি।’
তামিমের মনে হতাশা মেঘ, যে ছায়া ফেলেছিলো তা কেটে যায় ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর। এখন বেশ আছেন তিনি। কঠোর অনুশীলনও শরীর ক্লান্ত হলেও মন ফুরফুরে। বলছিলেনও, ‘যা হয়ে গেছে তা মন থেকে মুছে ফেলেছি। ভালো লাগছে জটিলতাগুলো কেটে যাওয়ায়। আমি এখন ক্রিকেট নিয়ে ভাবতে চাই। ক্রিকেটই সব। যা দিয়ে আমার পরিচিতি।’
আসলে তামিমকে বাদ দেওয়ার পেছনে তার ফিটনেসের চেয়ে অন্য কিছু কাজ করেছে বিসিবি সভাপতির মনে। বিশেষ করে নিজেকে ফিট প্রমাণের পরও যখন বোর্ড সভাপতি তাকে দলে নিতে নিষেধ করেছিলেন এবং অনেক আলাপ-আলোচনার পর তামিমকে দলে নিলেন মুচলেকা দেওয়ার শর্তে তখন অন্য মানে প্রকাশ করে। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছেও প্রশ্নটা করা হয়েছিলো। তিনি মুচকি হেসে বিষয়টা এড়িয়ে গেলেন।
৭২ ঘণ্টার নাটকের শেষ দৃশ্যে অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। আর তার জনক বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল নিজে। তামিমকে বাদ দেওয়ার আগে বিসিবির কোন পরিচালকের সঙ্গেও আলোচনা করেননি তিনি। উল্টো তাকে কেউ বোঝাতে গেলে গো-ধরে থেকেছেন। আসলে তামিমের মতো একজন ক্রিকেটারকে হেলাফেলা করতে গিয়ে বড্ড ঝুঁকি নিয়ে ফেলেছিলেন।