কালসর্পদোষ কাটানোর জন্য যতই ম্যাঙ্গালোরের মন্দিরে গিয়ে পুজো দিন না কেন, আইসিসি চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ফাঁড়া কাটছে না৷
মাত্র দিন সাতেক আগে ফের তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলে কী হবে, আগামী সেপ্টেম্বরে ফের আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে ভারতীয় বোর্ড থেকে তার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ কমছে৷ লোধা কমিশনের রিপোর্টে নির্দোষ প্রমাণিত হলে সমীকরণ বদলাতে পারে, কিন্ত্ত এই মুহূর্তে বোর্ডে যা পরিস্থিতি, নতুন আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহর৷ সব ঠিকঠাক চললে শ্রীনিবাসনের বদলে সেপ্টেম্বরে ভারতীয় বোর্ডের প্রতিনিধি হিসেবে আইসিসি চেয়ারম্যান হতে পারেন নাগপুরের দুঁদে কৌঁসুলি৷
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের জুনে সর্বসম্মতিক্রমে আইসিসি-র চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন শ্রীনিবাসন৷ নিয়ম অনুযায়ী ভারতীয় বোর্ডের প্রতিনিধির ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত চেয়ারম্যান থাকার কথা৷ বোর্ডে পালাবদল হয়ে ডালমিয়া প্রেসিডেন্ট এবং অনুরাগ ঠাকুর সচিব হওয়ার পরেই নতুন সচিব জানিয়ে দিয়েছিলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শ্রীনিবাসনই ভারতীয় বোর্ডের প্রতিনিধি হিসেবে আইসিসি-তে চেয়ারম্যান থাকবেন৷ তার পরে সেপ্টেম্বরে বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় সদস্যরা ঠিক করবেন, আগামী বছরের জুন পর্যন্ত তাকেই বেছে নেওয়া হবে, না ভারতীয় বোর্ড নতুন কাউকে মনোনয়ন দেবে৷
ভারতীয় বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জগমোহন ডালমিয়া দশ মাসের জন্য (সেপ্টেম্বর ২০১৫ থেকে জুন ২০১৬) আইসিসি চেয়ারম্যান হতেই পারেন, কিন্ত্ত এখন বোর্ড রাজনীতি যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, পাল্লা ভারী মনোহরের দিকেই৷ স্বাস্থ্য এবং বয়স ডালমিয়ার বিপক্ষে যাচ্ছে, তা ছাড়া আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, শশাঙ্ক হলেন অনুরাগ ঠাকুরের পছন্দের প্রার্থী৷ পালাবদলের পরে বোর্ডের সভায় বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবেও ডাক পেয়েছিলেন মনোহর৷ যা জানা যাচ্ছে, কোচ নিয়োগ থেকে শুরু করে বোর্ডের কর্মপদ্ধতি, সব বিষয়েই মনোহরের পরামর্শ নিচ্ছেন অনুরাগ৷
সম্প্রতি মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে শরদ পাওয়ার নির্বাচিত হওয়ার পরে এই দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠছে৷ মনোহরের মনোনয়ন আটকানোর জন্য শ্রীনিবাসন অবশ্যই সর্বশক্তি প্রয়োগ করবেন, কিন্ত্ত লোধা কমিশনের রিপোর্ট না এলে বোর্ডে যতই প্রভাব থাক, তা কাজে লাগানোর সুযোগই তার পাওয়ার কথা নয়৷ অন্য দিকে, ঘুঁটি অনেকটাই সাজিয়ে ফেলেছেন অনুরাগ৷
যেমন এটা মোটামুটি ঠিকই হয়ে গিয়েছে, অঙ্কে বড় বদল না হলে আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত টিম ডিরেক্টর পদে থেকে যাবেন রবি শাস্ত্রী৷ সচিন-সৌরভ-লক্ষ্মণদের কমিটি নতুন কোচ বাছতে পারে, কিন্ত্ত সেখানেও অধিনায়ক ও শাস্ত্রীর মতামত গুরুত্ব পাবে৷
সব মিলিয়ে কী দাঁড়াল? অনুরাগই এখন ভারতীয় বোর্ডের প্রকৃত ‘ঠাকুর’৷