সুইস ব্যাংকে বাড়ছে বাংলাদেশীদের অর্থ

সুইস ব্যাংকে বাড়ছে বাংলাদেশীদের অর্থ

credit suisseবাংলাদেশের বিত্তশালীরা যে তাদের অর্থ গচ্ছিত রাখার জন্য আরও বেশি হারে সুইস ব্যাংককে বেছে নিচ্ছেন, এর জন্য অর্থনীতিবিদরা বাংলাদেশে নিরাপত্তার অভাব এবং প্রতিকুল বিনিয়োগ পরিবেশকে দায়ী করেছেন।

মাত্র গতকালই সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশী নাগরিকদের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ এক বছরের ব্যবধানেই প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক এসএনবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ ৫০৬ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ, টাকার অঙ্কে প্রায় চার হাজার তিনশত কোটি টাকা।

আগের বছর এই অর্থের পরিমাণ ছিল ৩৭২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় তিন হাজার একশত পঞ্চাশ কোটি টাকা।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অর্থ রাখার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা এবং বিনিয়োগের যথাযথ পরিবেশ না থাকায় দেশের বাইরে, বিশেষ করে সুইস ব্যাংকগুলোতে গত এক বছরে বাংলাদেশ থেকে রাখা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে।

বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, “বিনিয়োগের পরিবেশ, নিরাপত্তাহীনতা আর টাকাটা কি পথে আয় করা হলো, তার ওপর নির্ভর করে কেন বাংলাদেশীদের জামানত সুইস ব্যাংকগুলোতে বাড়ছে। যেভাবেই টাকা আয় করা হোক, অনেক সময় বিনিয়োগের সুযোগ থাকলেও হয়ত এখানকার ব্যাংকে অর্থ রাখতে একজন নিরাপদ বোধ করছে না, সেক্ষেত্রে অর্থ দেশেরে বাইরে যাবার প্রবণতা তৈরি হয়।”

তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণেও সুইস ব্যাংকগুলোতে যাওয়া অর্থের পরিমাণ বেড়েছে।

কেবল বাংলাদেশীদের রাখা অর্থের পরিমাণই নয়, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে সারাবিশ্ব থেকে অর্থ জমা রাখার পরিমাণ বেড়েছে।

আগের বছরের তুলনায় ২০১৪ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বিদেশি গ্রাহকের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি সু্ইস ফ্রাঁ।

আর এই হিসাবে বাদ পড়েছে স্বর্ণসহ অন্যান্য মূল্যবান ধাতব বস্তু।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেই অর্থ, মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রী গচ্ছিত রাখার ক্ষেত্রে সুইস ব্যাংকগুলো জনপ্রিয়।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এমকে মুজেরী বলেছেন, সুইজারল্যান্ডের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা, স্থিতিশীলতা এবং গ্রাহকের গোপনীয়তা বজায় রাখার সুনামের কারণেই এমনটি হয়ে থাকে।

এর আগে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের ব্যাংক এ্যাকাউন্টের বিস্তারিত জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেখান থেকে কোনো উত্তর পায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।- বিবিসি

অর্থ বাণিজ্য শীর্ষ খবর