শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতার লক্ষ্য নিয়ে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিল গত বছরের অক্টোবরে।
তহবিলটির নাম দেওয়া হয় ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিল’ বা ‘স্টক মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ (এসএমএসএফ)। তবে ওই ঘোষণা দেওয়ার সাড়ে ৪ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো হদিস নেই।
এ তহবিলের ব্যাপারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, ‘এ তহবিল বিষয়ে আমি আপডেটেড না।’ তিনি বলেন, এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার আগে ফান্ডটির উদ্যোক্তাদের আগে ভাবা উচিত ছিল যে, এটা বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা। কারণ, শেয়ারবাজারে কোনো ইতিবাচক ঘোষণা আসলে বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে যায়। আর বাস্তবে যদি এর প্রতিফলন দেখা না যায়, তবে এর বিপরীত প্রভাব পড়ে।
শাকিল রিজভী বলেন, ‘এখনও এ তহবিলটি বাস্তবায়ন হতে পারে। এর উদ্যোক্তারা যদি নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেন।’ তবে না বুঝে-শুনে হুট করে শেয়ারবাজারের মতো একটি জায়গায় এ ধরনের ঘোষণা দেওয়া ঠিক নয় বলে তিনি মনে করেন।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর রাজধানীর গুলশানে বিএবির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জরুরি সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে স্টক মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (এসএমএসএফ) গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, ব্যাংকের পাশাপাশি বীমা ও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই তহবিলের উদ্যোক্তা হতে পারবে।
বিএবি ও বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকভাবে তহবিলের আকার হবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তীতে এর আকার আরো বাড়বে।
তবে উদ্যোক্তারা শুরুতে তহবিলটিতে এক হাজার কোটি টাকা জোগান দেবে। এটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান। মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আইন অনুসারে এ তহবিলটি পরিচালিত হবে। তহবিলের পুরো টাকাই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা হবে।
নতুন অথবা বিদ্যমান সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে কেউ তহবিলটি পরিচালনার দায়িত্ব পেতে পারে। যে প্রতিষ্ঠানের ওপর উদ্যোক্তাদের কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
বিএবির চেয়ারম্যান আরো বলেছিলেন, সংগঠনের সদস্যভুক্ত ২৯টি ব্যাংকের প্রতিটি সর্বনিম্ন ২০ কোটি টাকা করে এই তহবিলে জোগান দেবে। তবে চাইলে এর বেশিও দিতে পারে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো সর্বনিম্ন ১০ কোটি টাকা দিয়ে তহবিলের যুক্ত হতে পারবে।
তহবিলটির ধারণাপত্র থেকে জানা যায়, এটি ছিল ১০ বছর মেয়াদী একটি যৌথ তহবিল বা মিউচুয়াল ফান্ড, যা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। উদ্যোক্তাদের অংশ বাদে বাকি চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা প্রাক-প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট এবং ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা আইপিওর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।
ইসলামী ব্যাংকগুলোও যাতে এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে- সে জন্য ইসলামী শরিয়াহ বিধান পরিপালন করা হবে বলে জানানো হয়।