ভারতের বড় উৎসব হোলির আনন্দ নিমেষে বিষাদে পরিণত হলো। রাসায়নিক রং নিয়ে হোলি খেলায় মেতে উঠেছিল শিশু বয়স্ক সবাই। এই রাসায়নিকের বিষক্রিয়ায়ই ১৩ বছরের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে গেছে আরো ২শ’ ৩৫ জন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
শুক্রবার এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর নিশ্চিত করেছেন মহারাষ্ট্র রাজ্যের কর্মকর্তারা।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃত্থিরাজ চৌহান এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সিওন হাসপাতালে তিনি অসুস্থদের দেখেও এসেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, রাসায়নিক রং ত্বক দিয়ে শোষিত হয়ে শ্বাসকষ্ট এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুরেশ শেঠি এবং মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী ভরসা গায়েকোয়াদও হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
ধারাবি পুলিশ স্টেশনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছে, ঘাটকোপারের কিশোর বিকাশ বাল্মিকীকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। রংয়ের এলার্জিতে গুরুতর অসুস্থ বিকাশকে বাঁচাতে চিকিৎসকরা তেমন কিছুই করতে পারেনি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সে মারা যায়।
ধারাবি, সিওন এবং ঘাটকোপার এবং মুম্বাইয়ের মধ্যাঞ্চলে ২৩৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সিওন হাসপাতালের ডিন সন্ধ্যা কামাত জানিয়েছেন, তার হাসপাতালে ২১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। ২০৯ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিন জনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টা পর থেকে নতুন করে কোনো রোগী ভর্তি হয়নি বলে জানান সন্ধ্যা।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অসুস্থ বেশিরভাগের মধ্যেই মাথাধরা, বমিভাব, শ্বাসকষ্ট এবং ত্বকে লাল ফুসকোরি ওঠার মতো উপসর্গ দেখা গেছে।
পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মানুষকে সস্তা ও বিষাক্ত রং কেনা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার হোলি উৎসব চলার সময় মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য রাজধানী নয়াদিল্লিতে ৭শ’ ৭৭ জনকে জরিমানা করেছে ট্রাফিক পুলিশ।
জয়েন্ট পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) সত্যেন্দ্র গার্গ জানিয়েছেন, মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য ৫শ’ ৯৭টি মোটরসাইকেল, ১২৩টি কার এবং ৫৭টি অন্যান্য পরিবহন চালান করা হয়েছে।
ভারতে হোলি উৎসবে উশৃঙ্খলতা অবশ্য নতুন নয়। গত বছরও রাজধানীতে ৭শ’ ২০জন মাতাল চালককে জরিমানা করা হয়েছিল।