কী টেস্ট, কী ওয়ানডে, কী টি-২০; তিন ফরম্যাটেই এখন ভারতের সবচেয়ে পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। তাছাড়া ভারতীয় ব্যাটিং লাইনের প্রাণভোমরাও বলা হয় তাকে। আসন্ন সিরিজেও ভারতের ব্যাটিং লাইনকে ধাক্কা দিতে হলে বাংলাদেশকে দ্রুতই নিতে হবে কোহলির উইকেট।
তারপরও তো ব্যাটিং কোহলির দুর্বল জায়গা আছে। ক্রিকেট বিশ্বে সমাদৃত কোহলির র্দুবলতা হচ্ছে, উইকেটে সেট হওয়ার আগে অফ স্ট্যাম্পের সামান্য বাইরের বল। হতে পারে সেটা ইন কামিং, হতে পারে সেটা আউট গোয়িং। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এই চ্যানেলে বল করেই কোহলির বিরুদ্ধে সফল হয়েছিলেন রুবেল হোসেন।
প্রতিটি সিরিজের আগেই যেকোনো দল প্রতিপক্ষকে নিয়ে গবেষণা, বিশ্লেষণ, কাটা- ছেড়া করে। ঠিক করে প্রতিপক্ষ ঘায়েলের রণকৌশল। নিজেদের শক্তি ঝালিয়ে নেয়ার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের দুর্বলতার দিকেও নজর রাখতে হয়। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। এতদিন নিজেদের মতো অনুশীলন করলেও শনিবার বাংলাদেশ টেস্ট দলের সদস্যরা বসেছিলেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংয়ের ক্লাসে।
মিরপুরে বিসিবির বোর্ড রুমে প্রায় দুই ঘন্টা ক্রিকেটারদেরকে আসন্ন সিরিজের প্রতিপক্ষ ভারত সম্পর্কে তালিম দিয়েছেন হাথুরুসিংহে। সেখানে সবাইকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন। ভারতের বিভিন্ন খেলোয়াড়ের র্দুবলতা তুলে ধরা হয়েছে। কাকে কিভাবে বল করতে হবে, কিভাবে ব্যাটিং করতে হবে বোলারদের বিরুদ্ধে এসবও ছিল সেই ক্লাসে। ভিডিও অ্যানালিস্ট নাসির আহমেদ নাসু আগেই তৈরি করে রেখেছিলেন সবকিছু। শনিবার হাথুরুসিংহে সহ নাসু ধরিয়ে দিয়েছেন মুশফিক-রুবেল-সাকিবদের।
তা ক্লাস থেকে কী মিলল? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেটার বলেছেন, পেসাররা কোহলিকে টার্গেট করে বল করবেন। সেটা হবে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ইন সুইং ডেলিভারি। কোহলির ব্যাটিং ভিডিও দেখে সবাই মিলে তাকে ওই চ্যানেলে বোলিং করার সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। ওই ক্রিকেটার বলেন, “সবাই জানে কোহলি কি পছন্দ করে। তার হয়তো ব্যাটিংয়ে র্দুবলতা কম। তারপরও তাকে কোনো টার্গেট ছাড়া বল করে লাভ নেই। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে কোহলি একটু র্দুবল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে ওই খানেই আক্রমণ করবো। সেট হওয়ার আগে তাকে যদি আপনি ওই ইনসুইং বল করতে পারেন সে সমস্যায় পড়বে।”
হাথুরুসিংহে ও বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক পেসারদের বলেছেন, বোলিংয়ের সময় খুব বেশি জিনিস চেষ্টা না করতে। ওই ক্রিকেটার বলেন, “আমাদেরকে একটা চ্যানেলে বল করতে বলা হয়েছে। তাতে ব্যাটসম্যানরা আরও বেশি সমস্যায় পড়তে পারে। যদি আমরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে পারি তাহলে আমরা সফলতা পাব। কারণ তখন ব্যাটসম্যান ভিন্ন কিছু চেষ্টা করতে চাইবে। আর আমাদের তো বোলিং অনুযায়ী ফিল্ডিং সেট করাই থাকবে।”
শনিবার জিম সেশনের পর শুরু হওয়া ওই ক্লাসে স্পিনারদের মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে, হোম কন্ডিশনে স্পিনই বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের মূল শক্তি। স্পিনারদেরও বলা হয়েছে তাদের লুপ, ফ্লাইট দিয়ে বোলিং করতে। বল এমন জায়গায় ফেলতে হবে যেখান থেকে ব্যাটসম্যান বাধ্য হবে বলটা খেলতে এগিয়ে আসতে। তাতে সুযোগ আরও বেশি তৈরি হবে উইকেট পাওয়ার।
ব্যাটসম্যানদের বলা হয়েছে, পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করতে। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে। এবং নির্দিষ্ট বোলারের জন্য দেয়া পরিকল্পনাও মাথায় রাখতে বলেছেন হাথুরুসিংহে ও তার কোচিং স্টাফরা।