ভবিষ্যতে মানুষের মধ্যে কী ধরনের পরিবর্তন আসবে তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন গুগলের প্রকৌশল পরিচালক রে কুর্জওয়েল। তার মতে, আর ১৫ বছরের মধ্যেই মানুষ তার মস্তিষ্ক সরাসরি ক্লাউডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারবে। ক্লাউড হলো ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে তথ্য ও প্রোগ্রাম সংরক্ষণ।
সম্প্রতি নিউইয়র্কের এক্সপোনেনশিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশনের এক সম্মেলনে রে কুর্জওয়েল মানুষের সঙ্গে ক্লাউড প্রযুক্তির সম্পর্ক নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে ক্লাউড প্রযুক্তির সংযোগ ঘটবে এবং চিন্তাভাবনার বিষয়টি হবে কিছুটা জীববিদ্যাগত, কিছুটা যান্ত্রিক।
কুর্জওয়েলের এই ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে সিএনএন তাদের প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে্- ‘২০৩০ সালে আমাদের চিন্তাভাবনা বায়োলজিক্যাল ও নন-বায়োলজিক্যালের হাইব্রিড হয়ে যাবে’।
কুর্জওয়েলের মতে, মানুষ তাদের সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করতে ক্লাউড প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত হতে শুরু করবে।
কুর্জওয়েল বলেন. প্রতিটি কারিগরি উন্নতির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটি দিকই রয়েছে। মানুষ প্রযুক্তিকে যেদিকে নিয়ে যাবে প্রযুক্তি সেই দিকেই অগ্রসর হবে।
কুর্জওয়েল ছাড়াও সম্প্রতি হাইব্রিড মানুষ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেন ইসরায়েলের এক অধ্যাপক। তিনি বলেন, মানুষ আর মানুষ থাকবে না, হয়ে যাবে যন্ত্রমানব। মানুষ হিসেবে নিজের ওপর অসন্তুষ্টি, ধর্মবিশ্বাস লোপ পাওয়ায় মানবজাতির মধ্যে আগামী ২০০ বছরের মধ্যেই বিশাল পরিবর্তন আসতে পারে। ইসরায়েলের জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জুবাল নোয়া হারারি এ কথা বলেছেন।
হারারি বলেন, মানুষ নিজেকে আপগ্রেড করে আগামী ২০০ বছরের মধ্যেই সাইবর্গ বা যন্ত্রমানবে রূপান্তর করতে সক্ষম হবে। দীর্ঘায়ু লাভের আশায় মানুষ শরীরে যন্ত্র বসিয়ে নিজেকে সাইবর্গ করে তুলবে।
অধ্যাপক হারিরি মনে করেন, বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরা নতুন ধরনের দীর্ঘায়ুসম্পন্ন মানবজাতিতে পরিণত হবে এবং জীবন-মৃত্যুর সম্পূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী হয়ে যাবে। মানুষ হিসেবে অসন্তুষ্টি তাদের নিজেদের আপগ্রেড করতে উদ্বুদ্ধ করবে এবং সাইবর্গ প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় তারা এই প্রযুক্তির প্রয়োগ শুরু করবে।
হারারি সতর্ক করে বলেন, এই সাইবর্গ প্রযুক্তির বিনিয়োগের সুফল কেবল ধনীরাই ভোগ করবে। কারণ এ ধরনের প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের পেছনে খরচ করার সামর্থ্য কেবল তাদেরই থাকবে। ধনী আর গরিবের বৈষম্য বাড়তেই থাকবে। কেবল ধনীরাই দীর্ঘায়ু হতে থাকবে।