রানা প্লাজার দুই মামলায় চার্জশিট, আসামি ৪২

রানা প্লাজার দুই মামলায় চার্জশিট, আসামি ৪২

000-290x181রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির দুই মামলায় ৪২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করছে সিআইডি। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর সোমবার আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন। ভবন মালিক সোহেল রানা, রানার বাবা-মাসহ ৪২ জন আসামির ওই মামলায় ৪১ জনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। দণ্ডবিধির ৩০২/৩২৬/৩২৫/৩৩৭/৩৩৮/৪২৭/ ৪৬৫/৪৭১/২১২/১১৪/১০৯/৩৪ ধারায় এবং ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ আইনের ১২ ধারায় এই চার্জশিট দুটি দাখিল করা হয়েছে। দণ্ডবিধির আইনের হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলায় চার্জশিটে ৪১ জন এবং ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় চার্জশিটে ১৮ জন। তবে ইমারত নির্মাণ আইনের ১৮ জন আসামির মধ্যে ১৭ জনেই দণ্ডবিধির চার্জশিটে রয়েছেন। তাই দুই চার্জশিট মিলে মোট আসামি ৪২ জন। আসামিরা হলেন, ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, সাভার পৌর মেয়র আলহাজ রেফাত উল্লাহ, কাউন্সিলর মোহাম্মাদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইতার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, সাইট ইঞ্জিানয়ার মো, সারোয়ার কামাল, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. মধু, অনিল দাস, মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কমকর্তা উত্তম কুমার রায়, সোহেল রানার মা মর্জিনা বেগম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সাবেক উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. আব্দুস সামাদ, উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান, উপ-প্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. ইউসুফ আলী, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. মহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন, ইতার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শফিকুল ইসলাম ভূইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, মো. আতাউর রহমান, মো. আব্দুস সালাম, বিদ্যুৎ মিয়া, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্টাকটার, মো. আব্দুল হামিদ, আব্দুল মজিদ, মো. আমিনুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, মো. ইউসুফ আলী, তসলিম ও মাহবুল আলম। উক্ত আসামিদের মধ্যে সোহেল রানা, আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, মর্জিনা বেগম, রেফাত উল্লাহ, মোহাম্মাদ আলী খান, রফিকুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান রাসেল, বজলুস সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান তাপস, আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, মো, সারোয়ার কামাল, উত্তম কুমার রায়, মাহবুবুর রহমান, ফারজানা ইসলাম, রেজাউল ইসলাম ও নান্টু কন্টাকটার উভয় মামলার আসামি। আসামিদের মধ্যে প্রথম ১৬ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে এদের মধ্যে আবদুল খালেক, রেফাতউল্লাহ, অনিল দাস, শাহ আলম ও আবুল হাসান, মোহাম্মদ আলী খান ও রাকিবুল হাসান জামিন পান। অপর ২৬ জন পলাতক। চার্জশিটে পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন আবেদন করা হয়েছে। চার্জশিটে ইমারত নির্মান আইনের মামলায় ১৩৫ জন এবং দণ্ডবিধি আইনের মামলায় ৫৯৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। চার্জশিটে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক, ডেবিট মেয়র রিকো, প্রকৌশলী, এমতেমাম হোসেন, সহপ্রকৌশলী আলম মিয়া, আব্দুল মান্নান, রাসেল আহমেদ, আলমগীর হোসেন ও তন্ময় হাউজিং কোম্পানির চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম বাবুকে অব্যাহতি প্রদানের আবেদন করা হয়েছে। মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল জানান, মঙ্গলবার চার্জশিট দুইটি শনাক্তের জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে। মামলা দুটির ধার্য তারিখ আগামী ২৮ জুন। ওইদিন তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন অনুযায়ী পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়না জারি হতে পারে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা নামক ভবন ধসে এক হাজার ১১৭ জনকে মৃত উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১৯ জন মারা যায়। সে হিসেবে নিহত হয় এক হাজার ১৩৬ জন। অন্যদিকে আহত হয় এক হাজার ১৭০ জন। মৃত উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৮৪৪ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা রেখে ২৯১ জনের অশনাক্তকৃত লাশ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে ৭৮ জন।

অন্যান্য শীর্ষ খবর