সরকার যখন মনে করবে, তখনই জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করার বিল সংসদে উত্থাপন করা হবে। আজ সোমবার সংসদে তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, জামায়াত ও তার অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট সংশোধনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা আছে। সরকার যখন মনে করবে, বিলটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে তা পাসের জন্য সংসদে আনা হবে।
এর আগে নজিবুল বশর বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করার জন্য তাঁরা একটি মামলা করেছেন। এই মামলা কবে নিষ্পত্তি হবে। আইনের মাধ্যমে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে কি না তাও জানতে চান তিনি। প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক আরও বলেন, এ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বাদীদের (তরিকত ফেডারেশন) দরখাস্ত করতে হবে। এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, যেসব ভুয়া কাজি নিবন্ধন সনদ ছাড়া বিবাহ নিবন্ধন করছেন, তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, যারা পেট্রলবোমা মেরে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে, সন্ত্রাস দমন আইনে তাদের বিচার হবে। তবে সন্ত্রাস দমন আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল গঠন ও বিচারক নিয়োগ এখনো সম্ভব না হওয়ায় দায়রা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজের মাধ্যমে মামলা পরিচালনার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, ট্রাইব্যুনাল গঠনের আগ পর্যন্ত মানব পাচার সম্পর্কিত মামলাগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে। মানব পাচার রোধে ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর বিচার কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনে বিধি প্রণয়ন করা হবে।
এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে রাজধানীর বাইরে যেকোনো স্থানে হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ স্থাপন করতে পারবেন। বর্তমানে বিচার বিভাগ স্বাধীন। তাই এ বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের কিছু করার নেই। এরশাদের আমলে সংবিধান সংশোধন করে ঢাকার বাইরে হাই কোর্টের স্থায়ী আসন করা হয়। এর বিরুদ্ধে আইনজীবীরা আন্দোলনে নামলে সুপ্রিম কোর্ট ওই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন। বর্তমানে অস্থায়ী বেঞ্চ গঠনের বিধান সংবিধানে রয়েছে। তবে বর্তমান সরকারের আইন মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠালেও সুপ্রিম কোর্ট তা নাকচ করে দেয়। সরকারি শূন্য পদের সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক বলেন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে শূন্য পদের সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৭ জন। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির ৪৪ হাজার ৫৪২, দ্বিতীয় শ্রেণির ৪১ হাজার ৩২৬, তৃতীয় শ্রেণির ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৮ এবং চতুর্থ শ্রেণির ৬৯ হাজার ২৮১টি পদ রয়েছে।
শওকত চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ভারতের প্রস্তাবিত টিপাইমুখ প্রকল্পের প্রভাব নিরূপণের জন্য যৌথ নদী কমিশনের অধীনে একটি উপকমিটির মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পটির আঙ্গিক পরিবর্তন হতে পারে বলে ভারতীয় পক্ষ অবহিত করেছে।