বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা বর্তমানে বিশ্বে নিয়োজিত সর্বমোট সংখ্যার নয় শতাংশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের অধীনে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে, যে কোনো দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত রয়েছে। ’রবিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বিদেশে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে দেশের পতাকা সমুন্নত রাখার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জামসহ বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা যাতে আরো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে পারে, সে জন্য সরকারের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। ’স্বাধীনতার প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্য হয় বাংলাদেশ। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৮৮ সালে। বর্তমানে ১২২টি দেশের এক লাখ সাত হাজার ৮০৫ জন শান্তিরক্ষী বিভিন্ন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন। এরমধ্যে ২০৫ জন নারীসহ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর সংখ্যা ৯ হাজার ৫৯২ জন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১২৪ জন শান্তিরক্ষী বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২০১৪ সালের জুন থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত সময়েই নিহত হয়েছেন ছয় জন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই শান্তিরক্ষায় যারা জীবন দিয়েছেন তাদের স্মরণ করেন। ছয় জন প্রয়াত শান্তিরক্ষীর পরিবার এবং ১০ জন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা দেন। পরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ওয়াটকিনস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, জ্যেষ্ঠ শান্তিরক্ষী হিসাবে সেনা প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া প্রমুখ। পররাষ্ট্র সচিব, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিদর্শকসহ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রম নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও অনুষ্ঠানে দেখানো হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা যেন আরো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে পারে, সেজন্য সরকারের সার্বিক প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।’