বার্সেলোনার জয় ২-১ গোলে

বার্সেলোনার জয় ২-১ গোলে

 ব্যক্তিগত দ্বৈরথে মেসি হারাতে পারেননি রোনালদোকে। কিন্তু তাতে কি! দলীয় দ্বৈরথে রোনালদোর দল রিয়ালের বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়ে স্প্যানিশ লিগের শিরোপা জয়ের পথে বেশ কিছুটা পথ এগিয়েই গেছে বার্সেলোনা।

ন্যু ক্যাম্পের এই ম্যাচে বার্সেলোনার জয় ২-১ গোলে। এই জয়ে পয়েন্ট তালিকায় রিয়ালের চেয়ে চার পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে গেল লুইস এনরিকের শিষ্যরা।
রিয়াল-বার্সা ম্যাচের পোশাকি নাম ‘এল ক্লাসিকো।’ অনেকেই একে বিশ্ব সেরা দুই ফুটবল তারকার ব্যক্তিগত দ্বৈরথ হিসেবেও অভিহিত করেন। কাল ন্যু ক্যাম্পে ব্যক্তিগত লড়াইয়ে রোনালদোর সঙ্গে পেরে ওঠেননি মেসি-কারণ রোনালদো গোল পেয়েছেন, তিনি পাননি। কিন্তু ম্যাচ শেষে মেসি তাঁত ব্যক্তিগত পরাজয় ভুলেছেন দলগতভাবে দারুণ এই সাফল্যে।
কালকের রাতটা অনেক দিন মনে রাখবেন লুইস সুয়ারেজ। তাঁর গোলেই যে বার্সেলোনা পেল অসাধারণ এই জয়। প্রথমে অবশ্য বার্সেলোনা এগিয়ে গিয়েছিল জেরেমি ম্যাথিউয়ের গোলে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সেই গোল পরিশোধ করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সুয়ারেজের গোলে শেষ অবধি বিজয়ীর বেশেই মাঠ ছেড়েছে বার্সেলোনা।
খেলার শুরুটা অবশ্য হয়েছিল রিয়ালের আশা জাগিয়েই। ম্যাচের ১২ মিনিটের সময় বাম প্রান্ত থেকে করিম বেনজেমার এক ক্রসে রোনালদো পা ছোঁয়ালেও তা ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।
নিজেদের প্রথম সুযোগে রিয়াল ব্যর্থ হলেও বার্সেলোনা অবশ্য সে পথে হাঁটেনি। ১৯ মিনিটে প্রাপ্ত প্রথম সুযোগ কাজে লাগিয়ে ন্যু ক্যাম্প কাঁপিয়ে দেয় বার্সা। লিওনেল মেসির ফ্রি-কিক থেকে দুর্দান্ত এক হেডে গোল করেন জেরেমি ম্যাথিউ। ৩১ মিনিটে ব্যবধানটা বাড়িয়ে নিতে পারতো বার্সেলোনা। তবে সহজ এই সুযোগটি নষ্ট করেন ব্রাজিলের তারকা নেইমার।
নেইমার গোলটি মিস করে হয়তো হা-হুতাশই করছিলেন তখন। উল্টো দিকে তখন রিয়ালের দুর্দান্ত এক পাল্টা আক্রমণ। ওই আক্রমণ থেকেই লুকা মদরিচ ও বেনজেমার যুগলবন্দী তৈরি করে দেয় দারুণ এক গোলের সুযোগ। সেই সুযোগকে গোলে পরিণত করতে অবশ্য একেবারেই ভুল করেননি রোনালদো। এটি লা লিগায় রোনালদোর ৩১ তম গোল। ৩২ গোল করে এই তালিকার শীর্ষে আছেন মেসি।
প্রথমার্ধের একেবারে শেষের দিকে দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন গ্যারেথ বেল। ৪০ মিনিটের সময় তাঁর একটি গোল অফ সাইডের অজুহাতে বাতিল হয়। এই অর্ধের একেবারে শেষের দিকে তাঁর একটি শট হয় অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট।
৫৬ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। দানি আলভেসের একটি লব দৌড়ে এসে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রায় এক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে ক্যাসিয়াসকে পরাভূত করেন তিনি।
বার্সার এগিয়ে যাওয়া দারুণ উত্তেজনা ছড়িয়েছিল মাঠে। পিছিয়ে পড়ে রিয়ালের খেলোয়াড়েরা মাথা গরম করলেও শক্তি প্রয়োগে বার্সেলোনা ফুটবলাররাও কম যায়নি; ফলে রেফারিকে একটু শক্তই হতে হয়েছিল কাল। পুরো খেলায় হলুদ কার্ড দেখতে হয়েছে দুই দলের ১১ খেলোয়াড়কে।
জয়সূচক গোলটিকে সুয়ারেজ বার্সেলোনার হয়ে তাঁর ‘সেরা গোল’ হিসেবেই অভিহিত করেছেন, ‘অবশ্যই এই গোলটি বার্সার হয়ে আমার সেরা গোল। এই গোল বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে প্রতিপক্ষের কারণেই। রিয়ালের বিপক্ষে গোল করাটা অবশ্যই বাড়তি কিছু।’
চকিত এই গোলের ধরনও সুয়াররেজকে দিচ্ছে কিছুটা বাড়তি আনন্দ, ‘রিয়ালের রক্ষণের ফাঁকা জায়গা বেশ দ্রুত কাজে লাগাতে হয়েছে আমায়। বলটি ধরেই আমি রিয়াল ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়েছি, তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই। ভাগ্যও আমায় সহায়তা করেছে দারুণভাবেই।’
কোচ লুইস এনরিকের কণ্ঠেও স্বাভাবিকভাবেই ছিল আনন্দ আর তৃপ্তির সুর। সুয়ারেজকে প্রশংসায় ভাসিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এল ক্লাসিকোয় গোল কতে পারে খুব কম খেলোয়াড়ই। লুইস সুয়ারেজ পড়ে সেরাদের ওই ক্ষুদ্র দলেই। এ জন্যই বার্সেলোনা তাঁকে সই করিয়েছিল। আমরা তাঁকে মর্যাদা দিয়েছিল। তাঁর প্রতি আস্থা রেখেছিল। সেই প্রতিদানটা আজ সে দিল। বার্সেলোনায় যেদিন সে যোগ দিয়েছে। সেদিন থেকেই সে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তাঁর ব্যাপারে সেদিন থেকেই আমরা সন্তুষ্ট। তাঁর কমিটমেন্টও আমাদের মুগ্ধ করেছে বারবারই।’ সূত্র: এএফপি।

খেলাধূলা