কারাগারেই বাড়ির খাবার পাবেন গোলাম আযম

কারাগারেই বাড়ির খাবার পাবেন গোলাম আযম

যুদ্ধাপরাধের মামলায় কারাবন্দি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযম হাসপাতালের প্রিজন সেলে বসেই বাড়ির খাবার খেতে পারবেন, তবে তা অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।

গোলাম আযমের আইনজীবীদের একটি আবেদন শুনানির পর বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি গোলাম আযমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। ওই দিনই তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়; তারপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গোলাম আযমের আইনজীবী এহসান সিদ্দিকী ট্রাইব্যুনালে এক আবেদনে বলেন, তার মক্কেলের বয়স ৮৯ বছর। তিনি ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগ ও শারিরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ অবস্থায় তার পক্ষে হাসপাতালের খাবার খাওয়া কষ্টকর। তাই তাকে বাসা থেকে চার বেলা খাবার পৌঁছে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে শুনানি শেষে মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের আদেশে বলা হয়, গোলাম আযমকে এখন থেকে বাড়ির খাবার সরবরাহ করা যাবে। বাড়ি থেকে পাঠানো এসব খাবার তাকে দেওয়ার আগে অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।

বাড়ি থেকে খাবার সরবরাহ করার অনুমতি পাওয়ায় কারাগার বা হাসপাতাল থেকে আর খাবার পাবেন না জামায়াতের এই সাবেক আমীর। এছাড়া বাড়ির খাবার খেয়ে অসুস্থ হলে সেজন্য কারা কর্তৃপক্ষের কোনো দায় থাকবে না।

প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম এদিন গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে প্রসিকিউশনের বক্তব্য উপস্থাপন শেষ করেন। আগামী ১২ মার্চ এ বিষয়ে আসামি পক্ষের বক্তব্য শুনবে ট্রাইব্যুনাল।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতাকারী গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ইতমোধ্যে ৫২ দফা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেছে প্রসিকিউশন বিভাগ।

গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুুদ্ধের সময় তার নেতৃত্বে নানা জায়গায় শান্তি কমিটি, রাজাকার, আল বদর, আল শামস, পাইওনিয়ার ফোর্স, মুজাহিদ বাহিনী নামে পাকিস্তানপন্থী সংগঠন গঠন করা হয়। এসব সংগঠনকে অস্ত্র সরবরাহ করা এবং এ বিষয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে সুপারিশ করার দায়িত্বও ছিল তার।

একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা শুরুর পর খাজা খায়রুদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ১৪০ সদস্যের যে শান্তি কমিটি হয়, তার তদারকিতে গঠিত কমিটির ছয় জনের এক জন ছিলেন গোলাম আযম।

১৯৭১ সালে ঈদের দিন গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগার থেকে ৩৮ জনকে এনে কৈরতলা এলাকায় হত্যা করা হয়, যার সঙ্গে গোলাম আযম সম্পৃক্ত ছিলেন বলেও তদন্তে উঠে এসেছে।

এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও প্রকাশ্যে তদবির চালান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম আযম।

১৯৭১ থেকে ৭ বছর লন্ডনে অবস্থান করার পর ১৯৭৮ এ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে আবার বাংলাদেশে আসেন এই জামায়াত নেতা।

রাজনীতি