বুধবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চে ঢাকায় স্মরণকালের বৃহৎ গণর্যালি করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ গণর্যালিতে ৫ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটানো হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণর্যালির উদ্বোধন করবেন।
আগামী ১২ মার্চ প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ঢাকায় বড় ধরণের মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছে। বিরোধী দলের ওই মহাসমাবেশের আগে আওয়ামী লীগের এই গণর্যালি রাজনৈতিক দিক থেকে বিরাট গুরুত্ব বহন করছে বলে দলের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন।
বিএনপির কর্মসূচির আগে আওয়ামী লীগ তাদের শক্তি ও অবস্থান তুলে ধরার জন্যই বড় ধরনের এ শো-ডাউনে নামছে। আওয়ামী লীগের এ র্যালি শুধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চকে স্মরণ করাই নয়, রাজপথ নিয়ন্ত্রণের শক্তি হিসেবেও কাজ করবে বলে দলের নেতারা জানান।
রাজনীতির মাঠ যাতে বিরোধী দলের দখলে চলে না যায় সে জন্য বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণার পর পরই স্বাধীনতার মাস মার্চে প্রতিদিনই সভা-সমাবেশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে মাঠে থাকার নির্দেশ দেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরই অংশ হিসেবে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের দিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের র্যালি, ১১ মার্চ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মানববন্ধন এবং ১৪ মার্চ ১৪ দলের মহাসমাবেশসহ বেশ কিছু কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
তবে ৭ মার্চের র্যালিটি আওয়ামী লীগের একক কর্মসূচি হওয়ায় এ কর্মসূচির মাধ্যমে দলীয় শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যে একে সফল করতে গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই কেন্দ্র, ঢাকা মহানগর এবং মহানগরের প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে কর্মিসভা এবং সমাবেশের মাধ্যমে ব্যাপক শো-ডাউনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও নিজ নিজ অবস্থান থেকে গণর্যালিতে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
এছাড়া আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকদের শো-ডাউনেরও প্রস্তুতি রয়েছে।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান (ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন’র সামনে
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশমুখ) প্রাঙ্গণ থেকে গণর্যালি শুরু হবে। এখানে বিশাল মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। এ মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। এরপর তিনি গণর্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রাঙ্গণসহ মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে সমবেত হবেন। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর গণর্যালি শুরু হবে।
গণর্যালিটি শাহবাগ, কাঁটাবন, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও কলাবাগান হয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত ৩২ নম্বর ধানমণ্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হবে।
এদিকে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক দিনটির শুরুতে বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হবে।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চে গণর্যালিসহ সকল কর্মসূচি সফল করার জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী, সর্বস্তরের জনগণ ও দেশবাসীর প্রতি আহŸান জানিয়েছেন।
গণর্যালি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, এই গণর্যালি হবে ঐতিহাসিক গণর্যালি। কারণ, স্বাধীনতার ৪০ বছর পর যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে, তখন বিএনপি তাদের রক্ষা করতে স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার ও আলবদরদের নিয়ে মাঠে নেমেছে। এ প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের এই গণর্যালিতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে, বাংলার মাটিতে স্বাধীনতা বিরোধীদের ঠাঁই নাই।
তিনি আরো বলেন, ‘গণর্যালিকে সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ কর্মসূচিতে ব্যাপক মানুষের সাড়া পাওয়া গেছে। এই র্যালিতে ৫ লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেবেন বলে আমরা আশা করছি।’