আগামী ১২ মার্চ প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ‘ঢাকা চলো’ মহসমাবেশ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকারের প্রশাসন ও দলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই দিন বিরোধী দল গত ১৮ ডিসেম্বরের মতো যাতে কোনো নাশকতামূলক ঘটনা ঘটাতে না পারে সে জন্য বিশেষ সর্তকতা অবলম্বনের জন্য তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রী পরিষদের নিয়মিত সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন।
সভা সূত্র জানায়, সভায় কয়েক জন সিনিয়র মন্ত্রী প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন। তারা আগামী ১২ মার্চ বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকারকে হুমকি দিয়ে বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্য হালকাভাবে নেওয়া ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন।
এ সময় তারা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে বাঁধা দেওয়া ও দমন নির্যাতনের প্রসঙ্গও স্মরণ করিয়ে দেন।
এ ছাড়া গত ১৮ ডিসেম্বর ভোরে ঢাকায় বোমাবাজির প্রসঙ্গটিও তারা সভায় তুলে ধরেন।
সভা শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভায় রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন(অব.) এবি তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাদের সা¤প্রতিক বক্তব্য তুলে ধরেন।
সুত্র জানায়, সভায় মন্ত্রীরা বলেন, খালেদা জিয়া বলছেন, মার্চের মধ্যে সরকারের পতন হবে। মির্জা ফখরুল বলছেন, ১২ মার্চ টার্নিং পয়েন্ট, সাদেক হোসেন খোকা ওই দিন মন্ত্রীদের বাইরে বের না হতে বলছেন।
তাদের এই হুমকি হালকাভাবে বা ছোট করে দেখলে ঠিক হবে না। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী(খালেদা জিয়া) সরকার উৎখাতের সময় সীমা বেঁধে দিচ্ছেন। তাদের এসব হুমকির পেছনে কি ষড়যন্ত্র আছে, তারা ওই দিন কি করতে চান, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত।
গত ১৮ ডিসেম্বর বোমাবাজি করে তারা যে ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন, সে ধরনের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে ঘটতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার।
সভায় কেউ কেউ বিএনপি-জামায়াতের সরকারের সময় আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে বাঁধার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বিশেষ করে দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিলের ৩০ এপ্রিলের ডেটলাইনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ওই কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কর্মীদের ঢাকায় দাঁড়াতেই দেওয়া হয়নি।
সূত্র আরো জানায়, মন্ত্রীদের এসব বক্তব্য শোনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। কোনো নাশকতামূলক ঘটনার আশঙ্কা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দেন।
তিনি মন্ত্রী ও দলীয় এমপিদেরকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী-এমপিদের ঢাকায় নিজ নিজ এলাকায় কর্মীদেরও সর্তক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে সভায় প্রসঙ্গক্রমে ১৪ দল ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সরকারের সমালোচনা করে দেওয়া বক্তব্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে। নেতারা ফ্রি স্টাইলে যা খুশি বলছেন বলেও মন্ত্রীরা মন্তব্য করেছেন।
বিশেষ করে রোববার সংসদে দেওয়া ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপির বক্তব্য সভায় উঠে আসে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অতি কথনে কেউ কেউ লাভবান হয়েছেন। অন্যরা এটা দেখে অতি কথন করতে পারেন। অনেকের তো অনেক রকম আকাঙ্খা আছে।