চট্টগ্রামে দশ লাখ মানুষের মহাসমাবেশ করবে আ. লীগ

চট্টগ্রামে দশ লাখ মানুষের মহাসমাবেশ করবে আ. লীগ

চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে আগামী ২৮ মার্চ দশ লাখ মানুষের মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় মহাসমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রস্তুতি সভায় এ মহাসমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে চট্টগ্রামের মন্ত্রী, সাংসদরা উপস্থিত ছিলেন।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘নেত্রীর ইচ্ছা তিনি পলোগ্রাউন্ডে মহাসমাবেশ করবেন। সে জন্য আমরা ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ডেই মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। পলোগ্রাউন্ডে এদিন আমরা দশ লাখ মানুষের জনসমুদ্র রচনা করব।’

সভায় উপস্থিত নগরীর কোতয়ালী এলাকার সাংসদ ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূরুল ইসলাম বিএসসি প্যারেড গ্রাউন্ড ময়দানে সভা করার প্রস্তাব করেন। এ ছাড়া মহাসমাবেশের পরিবর্তে বিশাল জনসভা করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু অন্যান্য নেতারা এর বিরোধিতা করেন।

সভায় উপস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমিন বলেন, ‘বিএনপির মতো আমরা চল চল ঢাকা চল বলব না। আমরা বলব, যাই, যাই পলোগ্রাউন্ডে যাই। যার যার অবস্থান থেকে রিকসায়, নৌকায় যে যেভাবে পারে সেভাবে যেন মহাসমাবেশে যোগ দেয়, সেজন্য মানুষকে উব্দুদ্ধ করতে হবে। যাই, যাই পলোগ্রাউন্ডে যাই স্লোগান দিলে সারা দেশের মানুষ এবং মিডিয়ার দৃষ্টি আমাদের দিকেই আকৃষ্ট হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুতি নিয়ে পলোগ্রাউন্ডে বিএনপির মহাসমাবেশের রেকর্ড ভেঙে দিতে হবে।

বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াতের সকল ষড়যন্ত্র রুখতে এ মহাসমাবেশ আয়োজন করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের মানুষ ওইদিন প্রমাণ করবে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের ঘাঁটি।’

সভায় উপস্থিত সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির মহাসমাবেশের সঙ্গে আমাদের প্রতিযোগিতা করে লাভ নেই। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী, এটা প্রমাণ করার জন্যই আমরা মহাসমাবেশ করব।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার পর আমাদের মধ্যে কিছুটা ঘুন ধরেছিল। এজন্য হয়তো ঝগড়াঝাঁটি করেছিলাম। এখন আর আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। একসঙ্গে আগের মত কাজ করে মহাসমাবেশ সফল করব।’

সভায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের এমএ সালাম ২৮ মার্চের মহাসমাবেশ তিনদিন পিছিয়ে ৩১ মার্চ করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘পলোগ্রাউন্ডে বাণিজ্য মেলা চলছে। এটা ২৪ মার্চ শেষ হবে। চারদিনের মধ্যে পলোগ্রাউন্ড মাঠকে মহাসমাবেশের উপযোগী করা সম্ভব না-ও হতে পারে।’

সভায় নগর আওয়ামী লীগ নেতা আজম নাছিরউদ্দিনও বাণিজ্যমেলার প্রসঙ্গ টেনে মহাসমাবেশ করা যাবে কিনা সে বিষয়ে আশংকা প্রকাশ করেন।

কিন্তু সভার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘২৪ তারিখ মেলা শেষ হলেও তিনদিন সময় হাতে পাব। এর মধ্যে মহাসমাবেশের জন্য মাঠ প্রস্তুত করতে পারব। এরপরও যদি সম্ভব না হয় পরবর্তীতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেটা সমাধান করব।’

সভায় উপস্থিত জাসদ থেকে নির্বাচিত চট্টগ্রামের সাংসদ মইনউদ্দিন খান বাদল জানতে চান, মহাসমাবেশ আওয়ামী লীগের ব্যানারে নাকি ১৪ দলের ব্যানারে নাকি মহাজোটের ব্যানারে হবে? উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা মহাজোটের ব্যানারে সভা হবে বলে জানালে তিনি সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এ ছাড়া সভায় চট্টগ্রামের সাংসদদের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম আবুল কাশেম মাস্টার, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, সাংসদ এমএ লতিফ, চেমন আরা তৈয়ব, বেগম হাসিনা মান্নান, আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম আমিনুল ইসলাম আমিন, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হক দানু, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোছলেম উদ্দিন আহমেদসহ আরও বেশ কয়েকজন নেতা বক্তব্য রাখেন।

সভায় উপস্থিত নেতারা মহাসমাবেশের খরচ মেটাতে তহবিল গঠনের প্রস্তাব উঠলে সিনিয়র নেতারা এ বিষয়ে কমিটি করা হবে বলে জানান।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানান, চট্টগ্রামের তিনটি সাংগঠনিক জেলা কমিটির পাশাপাশি রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ মহাসমাবেশে যোগ দেবেন।

রাজনীতি