ক্রিকেটকে ঘিরে তার আগ্রহের কথা অনেকেরই জানা। বাংলাদেশের খেলা দেখতে অনেকবার এসেছেন মিরপুরে। ম্যাচের টেনশনের মুহূর্তে অন্য দর্শকদের সঙ্গে তাকেও দেখা গেছে মুখে হাত রাখতে। বাউন্ডারির সময়ও দেখা গেছে হাততালি দিতে। টাইগাদের পাশে এভাবেই সবসময় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বকাপ যাত্রার আগে তাই মাশরাফি বিন মর্তুজা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান তার স্কোয়াড নিয়ে। গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে বিশ্বকাপযাত্রী বাংলাদেশ দলকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। তাদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলার পরামর্শ দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর হাতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের জার্সি তুলে দেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, যে জার্সিতে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জলছাপ। হাস্যোজ্জ্বল প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রেখো, তোমরা রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এটা সত্য যে, জয়-পরাজয়ই খেলা। কিন্তু বিশ্বকাপে ম্যাচ জেতার লক্ষ্য নিয়ে নামতে হবে। বাঙালি বিজয়ের জাতি। কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এ জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আমরা প্রমাণ করেছি, দৃঢ় আস্থা ও সংকল্প থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারি। বিশ্বকে আরও একবার দেখিয়ে দিতে হবে, আমরা ক্রিকেটের রয়েল বেঙ্গল টাইগার।’ প্রধানমন্ত্রী তার দেওয়া শুভেচ্ছা বক্তৃতায় এভাবেই ক্রিকেটারদের অনুপ্ররণা দেন।
বিশ্বকাপগামী মাশরাফিদের জন্য তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।
এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন যে মাশরাফিদের জন্য অনেকটা চ্যালেঞ্জের, সেটাও জানা আছে ক্রিকেট অনুরাগী প্রধানমন্ত্রীর। তাই আত্মবিশ্বাসের ওপর ভরসা রেখে মাঠে নামার পরামর্শ দেন তিনি_ ‘অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন হয়তো ভিন্ন। কিন্তু আত্মবিশ্বাস অটুট থাকলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।’ এ সময় তিনি ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফদের সঙ্গে নিয়ে গ্রুপ ছবি তোলেন। নিজের বিশ্বাসের কথাও খুলে বলেন মাশরাফিদের সামনে_ ‘আমি বিশ্বাস করি, একদিন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এ অনুপ্রেরণা দারুণভাবে নিয়েছেন ক্রিকেটাররা। গণভবন থেকে ফিরে মাশরাফি জানান, বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা দোয়া নিয়ে এসেছি। তিনি আমাদের আত্মবিশ্বাস অটুট রেখে মাঠে নামতে বলেছেন। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ক্রিকেটবিশ্বে কেন আমাদেরকে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বলা হয়। তিনি আমাদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেছেন। এ দিন গণভবনে বিশ্বকাপ স্কোয়াডের সব সদস্য ছাড়াও কোচ হাথুরুসিংহে ও অন্যান্য কোচিং স্টাফ গিয়েছিলেন গণভবনে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বিশ্বকাপ স্কোয়াডের সব সদস্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীকে। এ সময় বিশ্বকাপ ঘিরে বাংলাদেশের লক্ষ্যের কথা জানান মাশরাফি বিন মর্তুজা। বিশ্বকাপে টাইগাররা যে শতভাগ উজাড় করে দেবে সে প্রতিশ্রুতিও দেন। শনিবারই বিশ্বকাপ খেলতে ব্রিসবেনের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে বাংলাদেশ দল। সেখানে প্রস্তুতি ক্যাম্প গঠন করে কিছু অনুশীলন ম্যাচ খেলবেন মাশরাফিরা। আর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলবেন তারা ১৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিপক্ষে।