বিহার প্রদেশে উগ্রপন্থি হিন্দু যুবকদের হামলা থেকে ১০ মুসলিম প্রতিবেশীর জীবন বাঁচিয়ে আলোচনায় এসেছেন পঞ্চাশোর্ধ এক হিন্দু বিধবা। এই সাহসী ভূমিকার পুরস্কার হিসেবে শৈল দেবী নামের ওই নারীর হাতে বুধবার ৫১ হাজার রুপির একটি চেক তুলে দিয়েছেন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জিতান রাম মানঝি।
রোববার বিহারের মুজাফফরাবাদ জেলার মুসলমান অধ্যুষিত আজিজপুর গ্রামে হামলা চালায় ৫ হাজারের বেশি হিন্দু যুবক। তারা চার মুসলমানকে হত্যা করে এবং আরো ২৫টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় প্রাণ বাঁচাতে প্রতিবেশী মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজন গিয়ে আশ্রয় নেয় শৈল দেবীর ঘরে। তখন শৈল দেবী তার দুই মেয়েকে নিয়ে দরজায় পাহাড়া দিতে থাকেন। দাঙ্গাকারীরা আসলে তিনি তাদেরকে মিথ্যা বলেন। তিনি তাদের বলেন,‘আমার ঘরে কোনো মুসলমান নেই। এ সময় কয়েকজন আমার ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে আমি তাদের বাধা দেই। পরে দাঙ্গাকারীরা ফিরে যায়।’ তার এ বক্তব্যের সত্যতা স্বীকার করেছেন ষাটোর্ধ বৃদ্ধ আশ মোহাম্মদ।
এ ঘটনা জানাজানি হলে দাঙ্গাকারীরা তাকে শাস্তি দিতে পারে বলে শৈল দেবীকে সতর্ক করে দেন প্রতিবেশীরা। তখন আতঙ্কিত ওই বিধবা তার দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে মোহাম্মদের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেন।পরে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আশ্বাস পেয়ে নিজ বাড়িতে ফেরেন তিনি।
রোববারের ওই হামলার ঘটনায় ৫ হাজার অজ্ঞতনামা লোককে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তবে এ পর্যন্ত কেবল ১৪ জনকে আটক করা সম্ভব হয়েছে।
এক হিন্দু যুবককে অপহরণ এবং হত্যার প্রতিশোধ নিতেই দাঙ্গাকারীরা আজিজপুর গ্রামে ওই হামলা চালিয়েছিল বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। গ্রামের লোকজন এখনো আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।