মেসিকে প্রেরণা হিসেবে মানছেন রোনাল্ডো

মেসিকে প্রেরণা হিসেবে মানছেন রোনাল্ডো

messi ronaldooবর্তমান ফুটবল বিশ্বের অন্যতম দুই সেরা তারকা তারা। দুই যুযুধান প্রতিদ্বন্দ্বীও। তাদের মধ্যে সদ্ভাবের কথা কেউ কখনও শোনেনি, তা সে মাঠ হোক বা মাঠের বাইরে। একে অপরের খেলার প্রতি সমীহ পর্যন্ত তারা দেখাতে অভ্যস্ত নন। এমন অহিনকুল সম্পর্কের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে বুঝতে অসুবিধা হয় না -লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কিন্তু সহসা সবাইকে চমকে দিয়ে রোনাল্ডো স্বীকার করলেন, তার প্রেরণার একটি বড় অংশ নাকি মেসিও!

ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিনে মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ তারকার এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকার। সেখানেই প্রসঙ্গক্রমে মেসির প্রশংসায় মেতে ওঠেন রোনাল্ডো। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মেসি ও জার্মানির গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যুয়ারকে পিছনে ফেলে ২০১৪-র বর্ষসেরা ফুটবলারের মর্যাদা হাসিল করেছেন সিআর-সেভেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে রিয়াল ফরোয়ার্ড বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, অন্য দুই প্রার্থীও বিজয়ী হওয়ার যোগ্য। ন্যুয়ার অসাধারণ একটা মরসুম পার করেছে। মেসি অবশ্য কিছুটা সমস্যা নিয়ে মরসুম শুরু করেছিল। কিন্তু ওর বিশ্বকাপটা দারুণ কেটেছে। আমরা তিনজনই সম্ভাব্য বিজয়ী ছিলাম। তবে শেষপর্যন্ত তুল্যমূল্য বিচারে আমাকেই বিজয়ী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। আমি দারুণ গর্বিত।’ এরপরই মেসিকে নিয়ে সরাসরি রোনাল্ডো বলেন, ‘মেসি আমার প্রেরণার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফুটবল জগতের সব ধরনের প্রতিযোগিতাই আমার কাছে প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। আমি নিশ্চিত আমাদের দু’জনের মধ্যেকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা মেসিকেও নিশ্চই প্রেরণা জোগায়। এটা আমার এবং ওর কাছে তো বটেই, পাশাপাশি অন্য খেলোয়াড়দের জন্যও ইতিবাচক একটা বার্তা।’ বার্সেলোনার সেরা অস্ত্র মেসিকে পেছনে ফেলে এবার নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ফিফা ব্যালন ডি’ওর পুরস্কার জিতেছেন রোনাল্ডো। এর আগে ২০০৮সালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে থাকাকালীন প্রথমবার ব্যালন ডি’ওর জিতেছিলেন তিনি। অন্যদিকে ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত টানা চারবার ফিফা বর্ষসেরা হন মেসি। দু’জনে মিলে টানা সাতবার ব্যালন ডি’ওর ভাগ করে নেয়াটাকে বিশ্ব ফুটবলের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন রোনাল্ডো। তিনি বলেন, ‘মেসি চারবার জিতেছে, আর আমি তিনবার। এই পরিসংখ্যান বিশ্ব ফুটবলের জন্য দারুণ ইতিবাচক।’

নিজের ফিটনেসকেও সাফল্যের অন্যতম কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন রোনাল্ডো। সাক্ষাৎকারে ২৯বছরের ডাকাবুকো তারকা বলেন, ‘আমি এক মরসুমে ৬০টিরও বেশি ম্যাচ খেলতে পারি। কারণ আমি আমার নিজের ফিটনেসের বাড়তি যত্ন নিই। আমি ঠিকমতো ঘুমাই এবং খাওয়াদাওয়া করি। শরীরকে সেরা কন্ডিশনে রাখার ক্ষেত্রে আমি যথেষ্ট মনোযোগী। অন্যথায় আপনি গতি ধরে রাখতে পারবেন না।’ পাশাপাশি তার সাফল্যের খিদে ধরে রাখার পেছনেও রয়েছে আত্মতুষ্টি এড়িয়ে চলার গোপন চাবিকাঠি। নিজের পারফরমেন্স নিয়ে পরিতৃপ্ত বলে কোনো শব্দ নেই রোনাল্ডোর কাছে। উন্নতি করে নিজেকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়াই তার মূল লক্ষ্য। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার বাঁ-পায়ের উন্নতির চেষ্টা করছি। সঙ্গে আমার ফ্রি-কিকেরও। এই দুটি ক্ষেত্রে সম্প্রতি আমি একটু কম সফল হয়েছি। তবে আমি জানি শিগগিরই আগের অবস্থায় ফিরতে পারব।’

সাক্ষাৎকারে পর্তুগালের অধিনায়ক আরও জানিয়েছেন, স্পেনের সবচেয়ে সফল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার পর তিনি ব্রাজিলে খেলতে চান । তার কথায়, ‘করিন্থিয়ানস ও ফ্ল্যামেঙ্গো দুটি বিখ্যাত ক্লাব। আমি আনন্দের সঙ্গে তাদের একটার জার্সি পরব।’ ব্রাজিলে খেলতে চাওয়ার কারণটাও জানান রোনাল্ডো। বলেন, ‘ব্রাজিলে আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। তাই দেশটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভীষণ ভালো। রিয়ালে আমি ব্রাজিলের অনেকের সঙ্গে কাটিয়েছি। এদের মধ্যে একজন কাকা, যাকে আমি সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করি।’

খেলাধূলা