পরিবহন খাতে প্রতিদিনের ক্ষতি ৩৬০ কোটি টাকা

পরিবহন খাতে প্রতিদিনের ক্ষতি ৩৬০ কোটি টাকা

poribohon sumitiবিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল-অবরোধের কারণে সারা দেশের পরিবহন খাতে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৩৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ছোট হলরুমে বুধবার আয়োজিত ‘গণপরিবহন, যাত্রী নিয়ে রাজনীতি ও সহিংসতা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ তথ্য জানায়।

সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “বর্তমানে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে গণপরিবহন ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা হচ্ছে। রাজপথকে রাজনৈতিক কর্মসূচির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পুলিশ ও বিজিবি প্রহরায় কিছু যান চলাচল করলেও কার্যত সারা দেশের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এতে করে পরিবহন খাতে প্রতিদিন ৩০০-৩৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।”

তিনি জানান, ২০১৫ সালের ৫ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত হরতাল অবরোধে রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৮ জন যাত্রী, ১১ জন চালক ও শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এসময় সারাদেশে ৫৭২ টি যানবাহনে আংশিক অগ্নিসংযোগ আর ৬৫ টি যানবাহনে সম্পূর্ণ পুড়ানো হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে তিন হাজার ২৩১ টি গাড়ি। এ ছাড়াও বিআরটিসির ৫০টি সাসে অগ্নিসংযোগসহ ৩১৭টি বাসে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, “৫ জানুয়ারি অবরোধ ডাকার পর সরকার সমর্থিত পরিবহণ মালিকরা গাড়ি চালানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু নাশকতার ভয়ে চালকেরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে পারছে না। তবুও পেটের দায়ে কিছু কিছু চালক গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে জীবন দিচ্ছে চালক এবং সাধারণ মানুষ।” তাই সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে এই অচলাবস্থা নিরসনের জন্য সরকার প্রধান ও বিএনপি প্রধান দুই নেত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তিনি জানান, ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জানুয়ারি ২০১৩ সাল থেকে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়ে ২২ জন যাত্রী ও ৭৩ জন চালক ও শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এসময় ২৬ হাজার ৩৭৪ টি যানবাহনে ভাংচুর ১ হাজার ১৬২ টি যানবাহনে আংশিক অগ্নিসংযোগ ও ৭৮১টি যানবাহন সম্পূর্ন পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

এ সময় ফিসপ্লেট খুলে ও রেল লাইন উপড়ে ২১ দফা রেলে নাশকতা চালানো হয় বলেও জানান তিনি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরো জানান, ২০১৩ জানুয়ারি থেকে জানুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত ২৫ মাসে পরিবহনে সহিংসতায় মোট নিহত হয়েছেন ৩২৪জন, আহত হয়েছেন চার লাখ ৪১ হাজার ৮৬৫ জন সাধারণ মানুষ।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান শরীফ রফিকুজ্জামান, অর্থ সম্পাদক এম মনিরুল হক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রাজিব মীর প্রমুখ।

বাংলাদেশ