ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) এর শাখা প্রধানকে বহিস্কার করেছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির সদ্য পরাজিত প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদে বিরোধী দলকে সহযোগিতার অভিযোগে তাকে বহিস্কারের নির্দেশ দেয়া হয়।
তবে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বহিস্কারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন নিয়মিত বদলীর অংশ হিসেবে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে সরিয়ে আনা হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে এক সময়ের সহকর্মী মাথ্রিপালা সিরিসেনার কাছে পরাজিত হন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে। গত নভেম্বরে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন সিরিসেনা পদত্যাগ করে বিরোধী পক্ষে যোগ দেন । তাঁকে সমর্থন দেয় প্রধান বিরোধী দল ইউএনপি, বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী দল জেএইচইউ ও তামিল ও মুসলিম দলগুলি। বিরোধীদের বড় অংশের সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিলেন তিনি।
গত ২৮ ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার দৈনিক সানডে টাইমস এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘সাধারণ বিরোধীদের সঙ্গে সম্পর্কের’ মাশুল গুনতে হবে কলম্বোয় নিযুক্ত র-এর শাখা প্রধানকে।
কলম্বো ও নয়াদিল্লি বেশ কিছু সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, সিরিসেনার সমর্থনে জনসমর্থন বাড়াতে সাহায্যের অভিযোগে গত ডিসেম্বরে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে ভারতকে বলা হয়েছিল।
এক ভারতীয় কর্মকর্তা জানান, ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ , নির্বাচনের আগে তিনি শ্রীলঙ্কার খণ্ড-বিখণ্ড বিরোধীদলগুলোকে একজোট হতে রাজী করান। এছাড়া তিনি রাজাপক্ষের মন্ত্রীসভা থেকে বেশ কয়েকজনকে বের করে আনার চেষ্টা করেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে নির্বাচনে প্রার্থীতা করতে সাহায্য করেছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কামারাতুঙ্গা। তার সঙ্গেও যোগাযোগ ছিলো ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার।
দক্ষিনের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রায়ই হস্তক্ষেপ করে থাকে ভারত। ১৯৮৭ সালে তামিল বিদ্রোহী ও সরকারের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে দেশটিতে সেনা পাঠিয়েছিল ভারত। রাজাপক্ষে পরপর দুবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় শঙ্কিত ছিলা ভারত। ভারতের অলিখিত শত্রু চীনের সঙ্গে রাজপক্ষের এই ঘনিষ্ঠতাই ছিলো এই উদ্বেগের কারণ। গত বছর নয়া দিল্লির সঙ্গে কোন আলোচনা ছাড়াই চীনের দুটি সাবমেরিনকে শ্রীলঙ্কা উপকূলে নোঙ্গরের সুযোগ দেয়ায় এটাকে বিপদসঙ্কেত হিসেবে দেখে ভারত।