প্রায় সতের বছর অপেক্ষার পর অবশেষে ১৯০ মিটার দৈর্ঘের জাহাজ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার থেকেই এই বেশি দৈর্ঘের জাহাজ বন্দর জেটিতে ভিড়তে পারবে।
বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ এ ঘোষণা দেন। বন্দরের ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
লয়েডস রেজিস্টারের পক্ষ থেকে সনদ হস্তান্তর উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিশ্বের ১০০টি শীর্ষ কন্টেইনার বন্দরের মধ্যে চার ধাপ এগিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ৮৬ তম অবস্থানে আসায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১৯০ মিটার দৈর্ঘ এবং ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ার সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, এতে করে এই বন্দরে নতুন নতুন জাহাজ আসার সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, বিগত পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পাঁচ কোটি টন পণ্য পরিবাহিত হয়েছে। এরমধ্যে ১ দশমিক ৭২ মিলিয়ন টিইউএস কন্টেইনার। এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সেবার মান ও সক্ষমতা বাড়াতে বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে।
বন্দর চেয়ারম্যান জানান, স্বাধীনতার পর সর্বোচ্চ অনুমদিত ১৬০ মিটার দৈর্ঘ এবং ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারতো। কিন্তু চাহিদার কারণে বিভিন্ন সময়ে সর্বোচ্চ অনুমমদিত ড্রাফট ক্রমান্বয়ে বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে ১৮৬ মিটার লম্বা এবং ৯ দশমিক ১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরো ৭ মিটার দীর্ঘ জাহাজ বন্দরে আসতে পারবে। একই সঙ্গে বর্তমানে ৯ দশমিক ১ মিটার ড্রাফটের জাহাজের স্থলে ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারবে।
১৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারলে আমদানিকারকগণ লাভবান হবেন উল্লেখ করে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, একইভাবে রপ্তানির ক্ষেত্রেও সুবিধা পাওয়া যাবে। এতে বছরে অন্তত ২০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। কমবে জাহাজের গড় অবস্থান কাল।
তিনি বলেন, এসব জাহাজ বন্দর জেটিতে ভেড়ার ফলে প্রতিটি জাহাজ বর্তমানের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৭০ টন বেশি পণ্য সামগ্রী সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসতে পারবে। এক্ষেত্রে অন্তত প্রতিটি জাহাজে ১০০টি বেশি কন্টেইনার আনতে পারবে। এতে অন্তত ৫০ লাখ ডলার পরিবহন খরচ কমবে।
বর্তমানে ১৯০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে না এসে বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করে। সেখান থেকে ছোট জাহাজে করে লাইটারিং করে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। এতে করে লোডিং, আনলোডিং-এর জন্য অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করতে হয়।
দেশে আমদানি-রফতানি পণ্যের ৯২ শতাংশই এই বন্দর দিয়ে পরিবাহিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমদানি-রফতানি প্রবৃদ্ধির হার ১২ থেকে ১৪ শতাংশ। এছাড়া বিগত পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরেন বন্দর চেয়ারম্যান। – See more at: http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/355908.html#sthash.a7qYqDrL.dpuf