শনি গ্রহের চাঁদ (উপগ্রহ) ডাইওয়ানে অক্সিজেনের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে নাসার নভো খেয়াযান ডিসকভারি। সম্প্রতি জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা স্বীকার করেছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রতিবেদনে গবেষকরা বলেছেন, প্রতিনিয়ত সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলা দৈত্যাকার গ্যাসিও গ্রহ শনির অন্যতম চাঁদ ডাইওয়ানের চারপাশে খুব সম্ভব অক্সিজেনের স্তর রয়েছে। অবশ্য ডিসকভারির পরিচালিত এর আগের গবেষণাগুলোর ফলাফলও সাম্প্রতিক এই থিউরিকে সমর্থন করে। কারণ সেগুলোতেও ধারণা করা হয়েছিলো যে আমাদের সৌরজগতের অন্যতম দুই গ্যাসের দানব শনি ও বৃহস্পতি গ্রহের প্রায় সব উপগ্রহেই সম্ভবত অক্সিজেন রয়েছে।
প্রতিবেদনটির সহ লেখক লন্ডন ইউনির্ভাসিটি কলেজের প্রফেসর এন্ড্রু কটিস বলেছেন, ডাইওয়ানে অক্সিজেন পাওয়া গেলেও এতে কিন্তু তরল জল নেই। তাই জীবনেরও সম্ভাবনা নেই। তবে শনি ও বৃহস্পতির অন্যান্য গ্রহগুলিতে তরল জলের সমূদ্র থাকা খুবই সম্ভব। এবং সেটি হলে ওইসব উপগ্রহগুলোতে জীবনের চিহ্ন পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠবে।
জানা যায়. ডিসকভারির নভোযান ক্যাসিনি গত দুই বছর আগে ডাইওয়ানের খুব কাছ দিয়ে ঘুরে আসে। সে সময় নভোযানটি ডাইওয়ানের চারপাশ ঘিরে অক্সিজেনের পুরু লেয়ার সনাক্ত করে। ফলে বিজ্ঞানীরা এখন শনি এবং বৃহস্পতির ভেতরে সোলার সিস্টেম ঠিক কিভাবে কাজ করে তার একটা ধারণা করতে পারছেন।
ডাইওয়ানের অক্সিজেন নিয়ে গবেষণার উপর ভিত্তি করে এখন বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে, এর পার্শ্ববর্তী আরেক উপগ্রহ ইনসিলেডাসে সম্ভবত কঠিন বরফের পৃষ্ঠভাগের নিচে তরল জলের সমূদ্র রয়েছে। এমনকি এখন একই ধারণা করা হচ্ছে বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপা, ক্যালিসটো, গানিমেডের সম্পর্কেও।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে যে, প্রফেসর কোটসের নেতৃত্বে একদল বৈজ্ঞানীক খুব তাড়াতাড়ি বৃহস্পতির চাঁদ সমূহে একটি অভিযান পরিচালনার জন্য ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিতে লবিং চালাবেন। যাকে তারা অভিহিত করেছেন জুস মিশন নামে।
এ ব্যাপারে প্রফেসর কোটস বলেছেন, এটি জীবনের চিহ্ন খোঁজার জন্য একটি দারুণ জায়গা হবে। কারণ টাইটান হলো শনির সবচেয়ে বড় উপগ্রহ। এটির নাইট্রোজেন ও মিথেনের সমন্বয়ে গঠিত বায়ুমন্ডল আমাদের পৃথিবীর শুরুর দিকের আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা দেবে।
নাসা ইতিমধ্যেই শনি অথবা বৃহস্পতির তৈলাক্ত লেকে একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট পাঠানোর প্রস্তাব প্রস্তুত করছে বলে জানা গেছে।