বগুড়া: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আরও দক্ষ, গতিশীল ও পৃথিবীর অন্যতম সেরা পেশাদার বাহিনীতে পরিণত হবে।
সোমবার (০৫ জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়ার নন্দীগ্রামে ১১ পদাতিক ডিভিশনের শীতকালীন প্রশিক্ষণের মহড়া অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাগত কর্মকাণ্ড ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দেশ ও জাতির প্রতিটি প্রয়োজনে সর্বদা গৌরবোজ্জল ভূমিকা পালন করে আসছে।
নির্বাচন পূর্ব, নির্বাচনকালীন এবং পরবর্তী সময়ে দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে পালন করে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে অব্যহত রাখতে সহযোগিতা করে আসছে।
তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান উন্ননের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে বিশ্ববাসীর কাছে একটি আধুনিক ও সময়োপযোগী সু-শৃঙ্খল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ মিশনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ করে সেনাবাহিনীর অবদান সর্বজন স্বীকৃত।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সামরিক সরঞ্জামাদি ও উন্নত প্রশিক্ষণ যেমন অপরিহার্য, তেমনি সেনা সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধিতে অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বাড়ানোও প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দক্ষতা বাড়াতে বর্তমান সরকার পূর্ববর্তী মেয়াদে বিভিন্ন উন্নয়ন ও কল্যাণমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে ১৯৭১ সালে আপামর মুক্তিকামী জনতার সঙ্গে বাঙালি অফিসার ও সেনা সদস্যরা একাত্ম হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। যুদ্ধে অনেক সেনা সদস্য শাহাদত বরণ করেছেন। দেশ মাতৃকার তরে আত্মত্যাগের এই দৃষ্টান্ত আজও অম্লান।
আবদুল হামিদ বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার জন্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে হজারো সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনী পুনর্গঠনে হাত দেন। উপযুক্ত ও চৌকস নেতৃত্ব তৈরির জন্য ১৯৭৪ সালের মার্চে ‘বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি’ (বিএমএ) গঠন করেন।
তিনি বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তে সেনা সদস্যদের রসদ বাড়ানো হয়েছে। অস্থায়ী কর্তব্যের জন্য জিসিও ও অন্যান্য পদবীর সদস্যদের দৈনিক ভাতা আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি, ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার- এ দায়িত্ব পালনের দৈনিক ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি জানান, জিসিও ও অন্যান্য পদবীর সৈনিকদের এলপিআর এর সময়কাল ২ মাস বাড়িয়ে ৪ মাস থেকে ৬ মাস করা হয়েছে। একই সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত মৃত সেনা সদস্যদের পারিবারিক পেনশনের হার চিকিৎসা ভাতা বাড়ানো হয়েছে। চাকুরির সময় সীমা পদবী অনুযায়ী এক থেকে দুই বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
জেসিওদের প্রথম শ্রেণি (নন ক্যাডার) এবং সার্জেন্টদের দ্বিতীয় শ্রেণির (নন ক্যাডার) পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ তিনি।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া, স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য এবং ১১ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আবদুল্লাহ হিল বাকীসহ তিন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।