দেশ ও দেশের রাজনীতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছেন সংগীতশিল্পী ফুয়াদ আল মুক্তাদির। রোববার দুপুরে গুলশানে তার গাড়িতে ভাংচুর হওয়ার পর তিনি ফেইসবুকে তার অফিসিয়াল ফ্যান পেইজে লেখেন, “বাংলাদেশ এখন নরক।”
“আট বছর আগে বাংলা গান ভালোবাসে আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি। আমার পরিবার আমাকে অনেকবার সতর্ক করে বলেছিল, ‘এ দেশটা গেছে রে’। কারও কোনো কথা আমি কানে নিইনি। আজ বুঝলাম। একটি ইট ইঞ্চিখানেকের জন্য আমার স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেনি। আমাদের সারা হাতে ছিল কাঁচের টুকরো। এই নরক এবং এর রাজনীতি এবং এর সবকিছু চুলোয় যাক! আমরা কেবল বাজার করছিলাম! এই দেশকে ঠিক করা সম্ভব নয়। আমি এখন মায়ার (ফুয়াদের স্ত্রী) চুল থেকে কাঁচের টুকরো বের করছি।”
ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের এই স্ট্যাটাসে সংগীতাঙ্গনের তারকাদের পাশাপাশি শ্রোতামহলও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। রোববার বিকেলে লেখা স্ট্যাটাসটি রাতভর আলোচনায় ছিল।
যে অবসকিউর ব্যান্ডের মাধ্যমে ফুয়াদ বাংলাদেশের সংগীত জগতে প্রবেশ করেছিলেন সেই ব্যান্ডের ভোকালিস্ট টিপু এই স্ট্যাটাসের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। ক্ষুব্ধ টিপু লিখেছেন, “আমার মনে হয় দেশের খুব একটা খোঁজখবর উনি (ফুয়াদ) রাখেন না। শিল্পী তার জায়গা থেকে দেশের প্রতি ভালবাসা দেখাবেন, কোনো কিছু করার থাকলে করবেন, তবে তেমন কোনো কাজ ফুয়াদ করেছেন বলে মনে পড়ছে না।”
টিপু আরও লিখেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করা ‘স্বার্থপর’ তারকাদের নিয়ে তিনি মোটেই ‘দুঃখিত’নন। এমন শিল্পীকে অবিলম্বে দেশ ছেড়ে যাওয়ার অনুরোধও করেছেন তিনি।
এরপরই তুমুল সমালোচনার মুখে ফুয়াদ সোমবার সকাল সোয়া এগারোটায় তার সেই স্ট্যাটাস মুছে ফেলেন।
১৯৮৮ সালে ৮ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন ফুয়াদ। ১৯৯৩ সালে বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলেন ‘জেফিয়ার’ নামে একটি ব্যান্ড। এ দল থেকে ‘মায়া-১’ এবং ‘মায়া-২’ নামে দুটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। এরপর দেশে ফিরে টিপু, এস আই টুটুলের ‘আরশিনগর’ থেকে প্রকাশিত হয় তার সংগীতায়োজনে ‘ভেরিয়েশন ২৫.২’ অ্যালবামটি। ২০০৭ সালে ‘বন্য’ অ্যালবামটি প্রকাশিত হলে আলোচনায় উঠে আসেন ফুয়াদ।
২০১৪ সালে তার সংগীতায়োজনে ‘হিট ফ্যাক্টরি’ অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়।