আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, ‘আমাদের দেশে জঙ্গিবাদের কলকাঠি নাড়ার জায়গা হয়েছে আমেরিকা আর লন্ডন। সেখানে বসে যুদ্ধাপরাধীদের কাছে হাজার হাজার কোটি টাকা পাঠিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
শুক্রবার বেলা ১২টায় শিল্পকলা একাডেমীতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আলমগীর কুমকুমের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের সরকার উৎখাতের এ ষড়যন্ত্র জনগণ কোনোদিন পূরণ হতে দেবে না।
তিনি খালেদা জিয়ার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আপনার যদি শহীদদের প্রতি শ্রদ্বাবোধ থাকে এবং স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী হন, তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ ত্যাগ করবেন এবং ১২ মার্চের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেবেন।’
যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ থেকে সরে না এলে বাংলার জনগণ সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার মাসে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ১২ মার্চের কর্মসূচি দিয়ে খালেদা জিয়া প্রমাণ করেছেন তিনি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নন। দেশের কোটি কোটি লোক যখন নির্যাতনের ভয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তখন খালেদা জিয়া পাক বাহিনীর ক্যান্টনমেন্টে আয়েশি জীবন যাপন করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে শপথ নিতে হবে যুদ্ধাপরাধীদের যতদিন এদেশ থেকে বের করতে না পারব ততদিন রাজপথে থাকার। যুদ্ধাপরাধীদের বাংলাদেশে কোন ঠাঁই নাই।’
ময়সনসিংহে ২১ ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনার ভাঙার ঘটনায় হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলনিশি জারি করায় ওই বিচারপতিকে তিনি অভিনন্দন জানান।
খালেদা জিয়ার ১২ মার্চের আন্দোলনকে তিনি যুদ্ধাপরাধী এবং তার দুর্নীতিবাজ দুই পুত্রকে রক্ষার আন্দোলন বলে তিনি অভিহিত করেছেন।
আলমগীর কুমকুম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়নে তিনি আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। তার আদর্শ লালন করে আমরা বঙ্গবন্ধুর সাচ্চা সৈনিক হতে পারি।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি তারানা হালিম সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘অতীতে আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন। ভবিষ্যতেও আমাদের সঙ্গে থাকবেন বলে আমরা আশা করি এবং সাগর-রুনি সাংবাদিক দম্পত্তি হত্যার বিচার চাই। এ সরকার নিশ্চই এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার করবে।’
আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক দুঃখ রয়েছে হয়তোবা। সরকার অনেক ক্ষেত্রে মৌসুমী রাজনীতিকদের কোলে তুলে নেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এ অভিমানের সুযোগে বিএনপির কাঁধে পা দিয়ে জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারে।’
সে কারণে সব ক্ষোভ অভিমান ভুলে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে রাজপথে থাকার আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘শারিরীক প্রতিবন্ধকতা আদর্শের প্রতিবন্ধকতা হতে পারে না। তার উপযুক্ত উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন আলমগীর কুমকুম। তবে দুঃখের বিষয় শেষ জীবনে তাকে অনেকের কাছে চিকিৎসা খরচের জন্য হাত পাততে হয়েছিল। আওয়ামী লীগ যতটুকু সহায়তা দিয়েছিল তা যথেষ্ট ছিল না।’
স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বিটিভির সাবেক মহাপরিচালক কবি আবু জাফর সিদ্দিকী, অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান, প্রকৌশলী ড. ইনামুল হক, জামাল উদ্দিন হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, শিল্পকলা একাডেমী মহপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি, শঙ্কর সাঁওজাল প্রমুখ।