রাজশাহীতে খেজুরের গুড়ে কাপড়ের রঙ!

রাজশাহীতে খেজুরের গুড়ে কাপড়ের রঙ!

রাজশাহীতে খেজুর গুড় তৈরিতে মেশানো হচ্ছে কাপড়ে ব্যবহার করা রঙ। শুধু তাই নয়, লাভের মাত্রা বাড়াতে তাতে মেশানো হচ্ছে চিনি ও চিটা গুড়।

শনিবার দুপুরে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে ভয়াবহ এই চিত্র ধরা পড়ে।image_112608_0

এ সময় প্রায় ১০ মণ ভেজাল গুড়, চিটা লালি গুড় ও কাপড়ের রঙ জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়।

জানা গেছে, সুস্বাদু খেজুর গুড়ে ভেজাল-কারবাবীদের ধরতে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। এরই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসনের দুইজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার খবর পেয়ে ভেজাল গুড় উৎপাদনকারীরা পালিয়ে যান। তবে জব্দ করা হয় চিটা গুড়, চিনি ও কাপড়ে দেয়া এক ধরনের বিষাক্ত রঙ। মূলত খেজুর গুড়ের রঙ ভালো করতেই কাপড়ে ব্যবহৃত রঙ মেশানো হচ্ছে।

চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল সাবরিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিমুল আখতার ও আলমগীর কবিরের যৌথ নেতৃত্বে উপজেলার মেরামতপুর ও পরানপুর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে গুড়ে ভেজাল মেশানো কারিগররা পালিয়ে যান।

শীত মৌসুম শুরু হলেই চারঘাটের এক শ্রেণীর অস্বাধু গুড় তৈরির কারিগররা অধিক মুনাফার আশায় অবৈধভাবে সুস্বাদু খেজুর গুড়ের সঙ্গে চিনি, হাইড্রোজসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক দ্রব্য মিশিয়ে খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

শুধু চারঘাট নয়, জেলার বাঘা, দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে গুড়ে ভেজাল মেশানোর কারবার। ফলে সাধারণ মানুষ গুড় কিনতে গিয়ে হচ্ছেন প্রতারিত।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিমুল আখতার জানান, জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক দ্রব্য দিয়ে এক শ্রেণীর গুড় ব্যবসায়ী এমন কর্মকাণ্ড চালানোর কারণে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ অভিযানকালে প্রায় ১০ মণ ভেজাল গুড়, চিটা লালি গুড় ও ক্ষতিকারক ক্যামিকেল উদ্ধার করা হয়। পরে সেগুলো জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়েছে।

এ অভিযান ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হবে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিমুল আখতার।

এ ব্যাপারে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তা ডা. আব্দুল আলীম জানান, গুড়ে এভাবে কাপড়ের ক্ষতিকারক রঙ, হাইড্রোজ, চিনি, পচা গুড় মিশিয়ে মানবদেহে প্রবেশ করানো হলে লিভার, কিডনি, জন্ডিসসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি রয়েছে।

এমনকি মরনব্যাধি ক্যান্সারও আঘাত হানতে পারে বলে জানান তিনি।

জেলা সংবাদ শীর্ষ খবর