এ অঞ্চলের ট্রানজিট কেন্দ্র হবে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী

এ অঞ্চলের ট্রানজিট কেন্দ্র হবে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী

সামাজিক বিনিয়োগ বাড়িয়ে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন করছে। এতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে।
অর্থমন্ত্রীর মতে, বর্তমান সরকারের অন্যতম বড় একটি সিদ্ধান্ত হলো বাংলাদেশকে ট্রানজিট দেশে পরিণত করা। ট্রানজিট দেশ হিসেবে এখানে পরিবহন ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে বিনিয়োগ আসবে। আর এ অঞ্চলের একটি ট্রানজিট কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিত হবে।
গতকাল শুক্রবার বিশ্ব বিপণন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের এক অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কথা বলেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ৭ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।
‘কোয়ান্টাম জাম্প ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান। এ ছাড়া বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান, সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ন্যান্সি লি ও এইচএসবিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এন্ড্রু টেল। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘অবকাঠামোর দুর্বলতার কারণে দেশি-বিদেশি বড় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। এ জন্য সরকার সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) বড় প্রকল্প, বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। পিপিপির আওতায় বিনিয়োগে প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা হয়েছে। এতে আমার সর্বোচ্চ মনোযোগ থাকবে।’
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, আশির দশকে নিম্ন প্রবৃদ্ধি ও নিম্ন প্রযুক্তি ব্যবহারের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পরিচিতি ছিল। সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। একদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে, আবার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে। মূলত সামাজিক বিনিয়োগের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। আর সামাজিক বিনিয়োগ দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখছে।
শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান বলেন, উল্লম্ফন নয়, স্থিতিশীলভাবে এগিয়ে যেতে চায় বাংলাদেশ। বর্তমান সরকার স্থিতিশীল উন্নতির উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নে এখন পিপিপি কার্যকর করতে চায় সরকার। এতে উন্নয়নে দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক মনোভাবের পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে।
ন্যান্সি লি বলেন, তৈরি পোশাক দিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের ব্র্যান্ডিং করতে পারে। বিভিন্ন দেশের লোকজন এখনো বাংলাদেশকে চেনে কি না, জিজ্ঞাসা করলে তারা জামাটি তৈরি কোথায় তা দেখিয়ে দেয়। তিনি মত দেন, মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হবে।
এন্ড্রু টেলের মতে, পৃথিবীর দুটি বাজারের মধ্যে বাংলাদেশের ‘নিউক্লিয়ার পজিশন’। এই দুটি বড় বাজার হলো ভারত ও চীন। বাংলাদেশ এই সুবিধা নিতে পারে। এ জন্য উদ্যোক্তারা যাতে আরও সহজে বিনিয়োগ করতে পারেন, সেই উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, চীন এখন বাংলাদেশের সস্তা শ্রমকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করছে।
এন্ড্রু টেলের মতে, আগামী কয়েক বছরে পৃথিবীজুড়েই ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা হতে পারে। এ জন্য আন্ত-আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়িয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে।
আতিউর রহমান বলেন, যেকোনো অর্থনৈতিক অর্জনে আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। আর বর্তমান সরকার নীতি-সহায়তা দিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারে।

অর্থ বাণিজ্য বাংলাদেশ