কেএফসির ফ্রায়েড চিকেনের মধ্যে পাওয়া গেছে তেলাপোকা। এ নিয়ে ভূক্তভোগী ক্রেতার পরিবারের সঙ্গে বাদানুবাদের ঘটনাও ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কেএফসির পল্টন শাখায় এ ঘটনা ঘটে।
ফ্রায়েড চিকেনের বিশ্বখ্যাত বিক্রেতা ক্যান্টাকি ফ্রায়েড চিকেন (কেএফসি)র বাংলাদেশি আউটলেটগুলোতে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন ও ত্রেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার অভিযোগ অব্যাহত রয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যার ঘটনা তারই সর্বশেষ উদাহরণ।
পল্টনের ব্যবসায়ী সাদিক আলীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় তার ভাগ্নে মর্তুজা পল্টন কেএফসি থেকে ৪টি ফ্রায়েড চিকেন এবং দুটি জিঞ্জার বার্গার কেনেন। বাসায় গিয়ে প্যাকেট খুলে খেতে গিয়ে তারা একটি চিকেনের মধ্যে তেলাপোকা আবিস্কার করেন।
এরপর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে তারা তাৎক্ষণিক অভিযোগ করতে পল্টন যান।
কিন্তু শুরুতে পল্টন শাখা কেএফসির ম্যানেজার ইসমাইল অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, ‘এটি আমাদের এখান থেকে কেনা নয়।’
পরে ক্রেতা চিকেন ক্রয়ের রশিদ দেখালে তিনি ভুল স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় অভিযোগকারী এবং উপস্থিত ক্রেতাদের বাদানুবাদে আশেপাশের মানুষ জড়ো হয়। এক পর্যায়ে অভিযোগকারী সাদিক আলীকে ভেতরে রান্নাঘর দেখাতে নিয়ে যায় কেএফসি কর্তৃপক্ষ। এ সময় সংবাদিকদের প্রশ্নও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তারা।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে একাধিকবার এই প্রতিষ্ঠানটির আউটলেটগুলোকে নিম্নমানের খাবার ও পরিবেশের দায়ে জরিমানা করলেও তার গুনগত কোনো পরিবর্তন আসেনি, এমনটাই অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
খাবারের মান ও পরিমানের তুলনায় দাম অনেক বেশি বলেও অভিযোগ তাদের।
নজরকাড়া বিলবোর্ড ও চমকপ্রদ বিজ্ঞাপণ দিয়ে ক্রেতা টানলেও খাবার খেতে গিয়ে হতাশ হয়েছে এমন কথা বলেছেন অনেকেই।
কেএফসি বাংলাদেশের মূল কোম্পানি ট্রান্সকম ফুডস লিমিটেড। সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ বিভিন্ন কর্মকর্তা গণমাধ্যমে তাদের পণ্যের গুণগত প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও প্রকৃত চিত্র ভিন্ন, বলেন একাধিক ক্রেতা।
এবছরের ৭ মার্চ ভেজাল বিরোধী অভিযানে কেএফসিকে বড় অংকের অর্থদণ্ড দিতে হয়। এসময় অভিযানের ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মকর্তারা কেএফসিতে গিয়ে দেখতে পান, অপরিষ্কার হাতেই একজন কর্মচারী চিকেন স্ট্রিপস (মুরগির মাংসে তৈরি এক ধরনের খাবার) তৈরি করছেন। অথচ তার জীবাণুমুক্ত হাত মোজা (হ্যান্ড গ্লাভস) পরার কথা ছিল। বিষয়টি ওই অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিনের নজরে আসার পর তিনি কেএফসিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) এর একটি সূত্র জানায়, কেএফসি যে ধরনের খাবার তৈরি করে তা বিএসটিআই নির্ধারিত ১৫৩টি পণ্যের আওতার বাইরে। তাই কেএফসির খাবার কতটা মানসম্পন্ন তা বিএসটিআই এর জানা নেই।