২০১২ সালে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়েছে ১৪ হাজার ২৪০ কোটি টাকা বা ১৭৮ কোটি মার্কিন ডলার সমপরিমান অর্থ।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ওয়াশিংটনভিত্তিক গ্লোবাল ফাইনান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি-জিএফআই ইলিসিট ফিন্যান্সিয়াল ফ্লোজ ফ্রম ডেভেলপিং কান্ট্রিজ: ২০০৩-১২’ শীর্ষক রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভ কার ও অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্পেনজারসের তৈরি প্রতিবেদনটি সোমবার মধ্যরাতে প্রকাশ করা হয়। এতে বিশ্বের উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলো থেকে এক দশকে কী পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে বাইরে চলে গেছে, তার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
১৫১টি দেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার হওয়া অর্থের হিসেব নিয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাটি। সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে কেবল উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে রেকর্ড ৯৯১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার এক বছরের ব্যবধানে ২০০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১১ সালে দেশ থেকে পাচার হয়েছিল ৫৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ৪ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। ২০১২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭৮ কোটি ডলার, বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৪ হাজার ২৪০ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে উল্লেখ্ করা হয়, ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে ১৩১ কোটি ৬০ লাখ ডলার অবৈধ পথে বাংলাদেশের বাইরে চলে গেছে। এ ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে ২০০৬ সালে।যার পরিমাণ ২৬৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়।সে বছর অবৈধ উপায়ে দেশের বাইরে চলে যায় ২৪৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর অর্থ পাচার কমে আসে। তবে নির্বাচন সামনে রেখে ২০১২ সালে তা আবার বেড়ে যায়। অস্বচ্ছ ব্যবসায়িক লেনদেন, দুর্নীতি ও কর ফাঁকির মাধ্যমে এ অর্থ স্থানান্তর করা হয়।
জিএফআই বলছে, ২০১২ সালে মিস ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৭৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। আর হট মানি আউটফ্লো বা ব্যালেন্স অব পেমেন্টের মাধ্যমে পাচার হয়েছে ১০২ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
জিএফআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক দশকে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে চীন থেকে। এর পরেই অবস্থান রাশিয়ার। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৫১।