বাঙালির একটাই খুঁতখুঁতানি। সারাদিনের ভিতরে যদি পেট পুরে ভাত-ই না খাওয়া হয়, তাহলে খেলাম কী! এমন চিন্তাধারার ভেতো-বাঙালিদের কাছে দুঃসংবাদ।
শুধু বাঙালি-ই নয়, পৃথিবীর প্রায় তিনশ কোটি মানুষের কাছেই দুশ্চিন্তার বিষয়। কারণ, বৃটেনের ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টার ও ভারতের ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজির গবেষকদের মতে , ভাত খেলে হতে পারে ক্যানসার।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং চীনের জন্য দুশ্চিন্তাটা বেশি হওয়ার কথা। কারণ, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যেসব অঞ্চলের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি সেইসব অঞ্চলের ধান থেকে তৈরি চালেই ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি৷ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ৪১৭ জন গ্রামবাসীদের নিয়ে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, আর্সেনিকযুক্ত মাটিতে চাষের ধান থেকে ক্যানসারে মৃত্যুর শঙ্কা বাড়ায়৷
শুধু আর্সেনিকের মাত্রা বেশি এমন চালেই ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি-নেচার গ্রুপের সায়েন্টিফিক রিপোর্ট জার্নালে এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।। ৪১৭ জন গ্রামবাসীর জীবনধারণ ও প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণ চালের খাচ্ছেন- এই দুটো বিষয় জানার পর, প্রত্যেককে বলা হয় রান্না করা ভাতের নমুনা এবং প্রস্রাবের নমুনা সংগ্রহ করতে৷ জটিল এক পরীক্ষা ওপর গবেষনা করার পর গবেষকরা বলেছেন, পানির মাধ্যমে চালেও বেশি আর্সেনিক এলে সেই চালে রান্না করা ভাত মানুষকে ধীরে ধীরে মারণরোগের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
যেসব চালে আর্সেনিক কম সেই চালের ভাত খেলেই আর সংশয় থাকবে না৷ বৃটেনের ডি মনফর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী পারভেজ হারিস জানিয়েছেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কম। স্বতন্ত্র এক গবেষণার ফলাফলে তারা দেখেছেন যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক চালে আর্সেনিকের মাত্রা বেশ কম৷ তবে কোন চালে আর্সেনিকের মাত্রা কম আর বেশি তা জানার কোনো উপায় নেই।
তবে ভবিষ্যতে এমন অবস্থার পরিবর্তন যে হবে, সে সম্পর্কে আশাবাদী তিনি। তার মতে, বাজারে শুধু প্যাকেটজাত চাল বিক্রি হয়। সেখানে আর্সেনিকের মাত্রা সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেই মানুষ টাকা খরচ করে ভালো চাল কিনতে পারবেন। তবে সেই তথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় না প্যাকেটজাত চালে।– ওয়েবসাইট।