তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ‘বিরোধী দলের কাছে লুণ্ঠিত বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। বিরোধী দল সরকারকে ন্যূনতম সাহায্য তো করছেই না, উল্টো অবৈধ অর্থ ব্যবহার করে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলীয় নেত্রী সরকারকে ল্যাংড়া-লুলা করার হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। কিন্তু এসব করে কোনো লাভ হবে না। কারণ দেশের মানুষ সরকারের পক্ষেই আছে, জঙ্গিবাদী-সন্ত্রাসী, লুটেরাদের সঙ্গে নেই।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্য মন্ত্রী সাংবাদিকদের কল্যাণে পৃথক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন এবং শিগগিরই অষ্টম ওয়েজবোর্ড গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে একটি ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। তা না হলে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠতো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দিন বদলের চ্যালেঞ্জ নিয়ে যখন দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, তখন বিরোধী দল নানা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করছে। শুধু দেশেই নয়, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে।’
বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতায় তিনি (খালেদা জিয়া) বিশ্বাস করতেন না। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনী বিজয়ী হবে এ আশায় তিনি ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন। তার স্বামী জিয়াউর রহমান তিনবার তাকে আনতে পাঠালেও তিনি ক্যান্টনমেন্ট ছাড়েননি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি একটি তথ্য উপস্থাপন করে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় একাত্তরের ১৭ মে চট্টগ্রাম থেকে লঞ্চে করে নারায়ণগঞ্জ হয়ে ঢাকায় এসেছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি ওই সময় ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে থেকে পাকিস্তানের করাচিতে যাওয়ার সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু মিত্রবাহিনী আক্রমন চালিয়ে বিমানবন্দর ধ্বংস করে দেওয়ার কারণে তিনি পাকিস্তানে যেতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বর্তমান নির্বাচিত সরকারকে বিদায় করার হুমকি দেন। তিনি (খালেদা জিয়া) বিদায় করার হুমকি দেওয়ার কে? কাউকে ক্ষমতায় আনা বা বিদায় করার ক্ষমতা একমাত্র রাব্বুল আলামীন আর দেশের জনগণের। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, কিন্তু কোন লাভ হবে না। বিএনপির আমলে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয় ছিল জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসী ও লুটেরাদের দেশ হিসাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাত্র তিন বছরেই সেই দুর্নাম কাটিয়ে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নকামী, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসাবে সারাবিশ্বে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ১৬ জন সাংবাদিককের নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে, জোটের ক্যাডাররদের হাতে অসংখ্য সাংবাদিককে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সাংবাদিকদের কল্যাণে একটি পৃথক ‘সাংবাদিক কল্যাণ তহবিল’ গঠন করছি। ফৌজদারী আইন সংশোধন করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিধান বিলুপ্ত করেছি। সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি অতিশীগগিরই অষ্টম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করা হবে।’