বন্দুক দেখিয়ে আর ভোট নেওয়া যাবে না : মতিয়া চৌধুরী

বন্দুক দেখিয়ে আর ভোট নেওয়া যাবে না : মতিয়া চৌধুরী

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, মহাজোট সরকার দেশের মানুষের গণতন্ত্র, উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা দিতে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই শত প্রতিকুলতা সত্ত্বেও আমাদের আমরা দেশের মানুষকে খাওয়াচ্ছি।

বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘মহাজোট সরকারের তিন বছর: কৃষি খাতে অগ্রগতি, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

সরকারের তিন বছরের সাফল্য নিয়ে ধারাবাহিক সেমিনারের অংশ হিসেবে এই সেমিনারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা কমিয়ে অন্য বিষয়ের স্থিতিশীলতা বাড়ালে দেশের উন্নয়ন হবে না। তাই বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বন্দুক দেখিয়ে আর ভোট নেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন,  কৃষিখাতের উন্নয়নে আমরা বিদ্যুৎ সেভাবে দিতে পারিনি। কারণ ৭ বছর আওয়ামী লীগ দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল না। কৃষি ও শিল্পায়নের জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। আর বিশেষ করে কৃষিভিত্তিক শিল্প বিদ্যুৎ ছাড়া হয় না।

বিদেশি দাতা গোষ্ঠীর সমালোচনা করে মতিয়া বলেন, এডিপি প্রাইভেট খাতে গভীর নলকূপ স্থাপন করতে সরকারকে বাধ্য করে। ফলে যত্রতত্র গভীর নলকূপ বসিয়ে আর্সেনিকের মতো রোগের মহামারী দেখা দিয়েছে। এখন আবার তারাই আর্সেনিক নিরসনে  আমাদের সহায়তা করতে আসে।

পানির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পানির নিশ্চিত ব্যবহার করার জন্য আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। এই কাজে আমাদের বিনিয়োগ দরকার। তবে বর্তমান সরকার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হলেও পানির সদ্ব্যবহার করবে।’

তিনি সমালোকচকদের উদ্দেশ্যে বলেন,  ‘আপনারা অর্ধেক বলবেন আর অর্ধেক বলবেন না তা হবে না। ভাসুরের নাম অর্ধেক বলবেন তা হবে না। কোদালকে কোদাল, দাকে দা এবং সত্যকে সত্য বলতে হবে।’

পাবর্ত্য শান্তিচুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে হানাহানি, অশান্তি ও নৈরাজ্যজনক অবস্থায় কঠিন ঝুঁকি নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার পাবর্ত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি করেছিলো। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এই অঞ্চলের মানুষের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে।’

মতিয়া বলেন, ১৯৯৮ সালের বন্যার সময় বিবিসি বলেছিল দুই কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। কিন্তু দেশে দুটি পিঁপড়াও মারা যায়নি। কারণ সে সময় যোগ্য নেতৃত্বের হাতে দেশ ছিল।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ গরীব দেশ, আমরা অদম্য এবং আমাদের নানা দুর্যোগ ও বিপাক সত্ত্বে মানুষকে খাওয়াই।

তিনি বলেন, কিন্তু যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বিএনপি’র আমলে ভাত তো দূরের কথা, সারের দাবিতেও আন্দোলন করায় কৃষক হত্যা করা হয়।

সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমাদের দেশে যারা বিভিন্ন সময়ে অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় এসেছে তারা গণতন্ত্রের কথা বলেছে। মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি হলে মাসিকে ডাইনী বলা হয়। আমাদের সরকার নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির ভেতর দিয়েই খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদদের সম্মান করে গেছেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের নানা প্রতিকূলতার ভেতর দিয়েই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘এই সরকার তিন বছরে কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি করেছে। তবে এর আগে যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা সারের জন্য মানুষকে পাখির মতো গুলি করে মেরেছে। এই সরকারের। আরেকটি সফলতা হলো শিক্ষানীতি।’

সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক শেখর দত্ত।

সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মান্নান এমপি, প্রশিকার চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাভোকেট আফজাল হোসেন, সাবেক সচিব জহুরুল হোসেন ও  ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা।

রাজনীতি