দক্ষিণবঙ্গের গাজী পীরের পৌরাণিক কল্পকথা অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে ডিজিটাল চলচ্চিত্র ‘গাজী কালু চম্পাবতী’। ১৯৬৯ সালে আনোয়ার হোসেনের অভিনয়ে প্রথম আর শেষবারের মতো বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে পা ফেলেছিল ‘গাজী কালু চম্পাবতী’। ৪৩ বছর পার আবারও এই লোকগাঁথা নিয়ে নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্র, তবে একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে।
গাজী পীরের অনুসারী সুজা খাঁ পীর সাহেবের প্রতি অপার ভক্তি আর ভালোবাসা থেকে তার দু’সন্তানের নাম রাখের গাজী আর কালু। ছেলেবেলা থেকেই গাজী আর কালুর মাঝে প্রচ্ছন্নভাবে পরতে থাকে পৌরাণিক চরিত্র গাজী-কালুর দৈবপ্রভাব। এমনকি নাটকীয়ভাবে ছবির গল্পে দুই ভাইয়ের জীবনে চম্পাবতী নামে এক নারীর আবির্ভাবও ঘটে।
এই যুগের প্রেক্ষাপটে ‘গাজী কালু চম্পাবতী’ রচনা ও পরিচালনা করেছেন সালাহউদ্দীন মুহাম্মাদ। সিনেমা নির্দেশনার ক্যারিয়ারের প্রথম ছবিতেই পৌরাণিক কাহিনী বেছে নেয়ার প্রসঙ্গে সালাহউদ্দীন বলেন, ‘ছেলেবেলা কেটেছে আমার সাতক্ষীরার গ্রামে। তখন থেকেই দেখে এসেছি দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জীবনাচরণে গাজী পীর কিংবা বনবিবি’র অমোঘ প্রভাব। কিন্তু আফসোস হয় বাইরের দেশের ছবিগুলোতে তাদের পৌরাণিক গল্পগুলোকে এতো অসাধারণভাবে চিত্রায়ণ করা হয়, যে জায়গাটা থেকে আমরা এখনও অনেকটাই দূরে আছি। সে দায়বদ্ধতা থেকেই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছি।’
সুন্দরবন ও এর আশেপাশের ঘন অরণ্যে ঘেরা দক্ষিণাঞ্চলীয় জনপদে শুটিং শেষে এখন চলছে সম্পাদনার কাজ। বাকি আছে সামান্য কিছু শুটিংও। ছবির কাজ সম্পর্কে সালাহউদ্দীন আরও বলেন, ‘পুরো ডিজিটাল ফরম্যাটে নির্মাণাধীন চলচ্চিত্রটি গাননির্ভর হলেও গান নিয়ে আমার বাণিজ্যিক কোনও চিন্তা নেই। বিনামূল্যে গাজী-কালুর পালা আর চলচ্চিত্রের কিছু গান শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।’
আসছে এপ্রিলের মাঝেই চলচ্চিত্রটির পুরো কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরপরই চলচ্চিত্রটি দেশব্যাপি মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গেছে।
চলচ্চিত্রটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাহুল আনন্দ, শতাব্দী ওয়াদুদ ও তৃণা তানজিলা। আবহসংগীত ও সংগীত পরিচালনা করবেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে রূপদানকারী রাহুল আনন্দ নিজেই। টাইটেল অ্যানিমেশন করছেন সব্যসাচী হাজরা। সিনেমাটিতে ওয়রড্রোব পার্টনার হিসেবে রয়েছে দেশাল।