বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। তবে দেশের স্বার্থে প্রয়োজনে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতেও বাংলাদেশ তৈরি আছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি গতকাল মঙ্গলবার এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমুদ্রসীমা বিরোধ’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সমুদ্রসীমা-সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তিতে আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কৃতিত্ব দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল যা-ই বলুক না কেন, প্রতিবেশী বৃহৎ রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই দেশের স্বার্থে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতে আমরা পিছপা হব না। কাজেই এটি কখনোই নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়, সফল পররাষ্ট্রনীতিরই নিদর্শন।’
দীপু মনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা-সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তিতে নায্যতার নীতিতে বাংলাদেশ ন্যায়বিচার পাবে বলে আমরা আশা করছি। প্রাপ্যের চেয়ে বেশি কিছু চাই না। ইটলসে আমরা বাংলাদেশের পক্ষে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে দাবি তুলে ধরেছি। আমরা এখন ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।’
জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ল অব দ্য সি (ইটলস) ১৪ মার্চ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমুদ্রসীমার বিরোধের বিষয়ে রায় দেবে। গত সেপ্টেম্বরে এ মামলার বিষয়ে দুই দেশ তাদের দাবির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আলোচনার পর দেখেছি, এ বিরোধে কোনো ফলাফল আসছে না। এর প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকার সমুদ্রসীমায় নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য স্বল্পতম সময়ে ফলাফল আদায় করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রেখেই বিকল্প পথটি বেছে নিয়েছি আমরা। কারণ, দেশের স্বার্থে এটি অপরিহার্য ছিল।’
বিরোধী দলের সমালোচনার জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ব্যর্থ হয়েছি বললে ৩৫ বছরের ব্যর্থতা নিয়ে বলতে হবে।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খুরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে শুনানিতে যেসব বক্তব্য তুলে ধরেছি, তার মাধ্যমে আমরা ইতিবাচক ফলাফল আশা করছি। ইটলসের রায় বাংলাদেশের পক্ষে এলে সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের সুফল ভোগ করবে বাংলাদেশ।’
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক ইমরুল কায়েস।