ষাড় আর ভল্লুকের যুদ্ধ নয়, পুঁজিবাজারে চলছে আরেক লড়াই। আর ঠাণ্ডা এ যুদ্ধে অবর্তীর্ণ হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও দেশের মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো।
আর পুঁজিবাজারের অবিচ্ছেদ্য এ দু’টি অঙ্গের যুদ্ধটা অমনিবাস ও এমএসএ-প্লাস ইস্যুতে অনেকট স্পষ্ট হয়েছে|
এছাড়া নতুন নতুন মার্চেন্ট ব্যাংকের অনুমোদন, পুঁজিবাজারের দৈনন্দিন লেনদেনে মার্চেন্ট ব্যাংকের আনুপাতিক হারে অংশগ্রহণ বাড়ায় ডিএসই কর্তৃপক্ষকে তা অনেকটাই অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে ।
এদিকে নতুন নতুন মার্চেন্ট ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়াতে ও পুঁজিবাজারের মোট লেনদেনের ৪৪ শতাংশ মার্চেন্ট ব্যাংকারদের মাধ্যমে হওয়ার ফলে অনেকটা স্বস্তির মধ্যে রয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকাররা।
এ বিষযে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংাকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মোহাম্মদ এ. হাফিজ বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারের মোট লেনদেনের ৪৪ শতাংশ মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
এছাড়া বিশ্বেও বিভিন্ন দেশেও পুঁজিবাজারের মোট লেনদেনের বেশিরভাগই মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
আগামীতে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও এ ধরনের ঘটনা ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করে এ মার্চেন্ট ব্যাংকার।
এদিকে দুই পক্ষই বলছে, কোনো পক্ষকে বাদ দিয়েই পূর্ণাঙ্গ পুঁজিবাজার সম্ভব না। কিন্তু, বাস্তবে অমনিবাস ইস্যুতে এতে ঐক্যমতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি পক্ষ দুটি।
এ বিষয়ে ডিসেম্বরে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিএসইর মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোনো সমাধান হয়নি। তবে পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরো বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
উপরন্তু মার্চেন্ট ব্যাংক অমনিবাস হিসাবের স্বচ্ছতা ও ডিএসই এমএসএ-প্লাস সপ্টওয়ারে অমনিবাস বিও হিসাব না রাখার পক্ষে এসইসিকে নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেছেন উভয়েই।
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর অভিযোগ, পুঁজিবাজারের মোট লেনদেনের ৪৪ শতাংশ মার্চেন্ট ব্যাংকারদের মাধ্যমে হওয়ার কারণে ডিএসই শঙ্কিত। আর এ শঙ্কা থেকেই ডিএসই এ ধরনের একটি পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে যেটি অমনিবাস বিও হিসাব সমর্থন করবে না।
এদিকে ডিএসইর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অমনিবাস বিও হিসাবকে পুঁজিবাজার কারসাজির কারণ নির্ণয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ভুঁতুড়ে হিসাব বলে আখ্যায়িত করেছে। যা বাজারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অন্তরায়।
এভাবে দুটি পক্ষ স্ব স্ব অবস্থান থেকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এসইসিকে জানিয়েছে। সূত্রমতে, এর আগে এসইসি বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করতে বললেও তা সফল না হওয়ার কারণে সর্বশেষ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে এসইসি।
এ লক্ষ্যে বুধবার বেলা ১০টায় মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিএসই প্রতিনিধিদের সঙ্গে এসইসির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গেল কয়েক মাসে এসইসি ৫-৬টি মার্চেন্ট ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে। এতে স্বস্তি বিরাজ করছে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মধ্যে। আর ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশও মার্চেন্ট ব্যাংকের পক্ষ অবলম্বন করছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ডিএসই’র মোট লেনদেনের ৪৪ শতাংশ লেনদেন হচ্ছে, বিএমবিএ সভাপতির এমন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএসই জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।
বুধবারের বৈঠকের বিষয়ে আহসানুল ইসলাম বলেন, এমএসএ-প্লাস ট্রেডিং-এর বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। আমাদের ইন্টারনেটভিত্তিক যে পদ্ধতি রয়েছে তাতে কোনো ধরনের সমস্যা নেই। তবে তা আইনসিদ্ধ না।
তাই হয় আইনের পরিবর্তন আনতে হবে, অন্যথায় অমনিবাসের লেনদেন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে বলে জনান তিনি। এসইসি যে সিদ্ধান্ত দিবে তাই কার্যকর করা হবে।