রুয়েটের হলে তল্লাশি, ৯ শিবিরকর্মী আটক

রুয়েটের হলে তল্লাশি, ৯ শিবিরকর্মী আটক

arrরাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শহীদ লেফটেন্যান্ট সেলিম হলে তল্লাশি চালিয়ে লোহার রড ও বিভিন্ন বইসহ নয় শিবিরকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

এ সময় হলের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে পুলিশের সামনেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাকিব নামের এক শিবিরকর্মীকে ছুরিকাঘাত করে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ তল্লাশি চালানো হয়।

গুরুতর আহত রাকিবকে পুলিশ হেফাজতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটেরিয়াম থেকে রুয়েট শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইয়াসিরসহ দুই নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।

আটককৃত অন্য শিবিরকর্মীরা হলেন মামুনুর রশীদ, আদনান আহমেদ, আহাদ আলী, এসতিয়ার আহমেদ, নুর আলম সিদ্দিকী, গোলাম আযম, ফরহাদ রেজা। বাকি দুজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রুয়েটের অডিটোরিয়ামে বৃহস্পতিবার সকালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে রুয়েট শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইয়াসিরের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন নেতাকর্মী সেখানে গিয়ে জামায়াতের ডাকা হরতালের কারণে অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য হুমকি-ধামকি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিবির নেতা ইয়াসির ও কর্মী মামুনর রশীদকে আটক করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় রুয়েটের শিবির নিয়ন্ত্রিত সেলিম হলে ইট-পাথর ও লাঠি নিয়ে জড়ো হয় শিবিরকর্মীরা।

খবর পেয়ে মতিহার থানার ওসি আলমগীরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল হলের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় ছাত্রলীগের রুয়েট শাখার সভাপতি রাইসুল ইসলাম রোজ ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান হিমেলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও সেখানে জড়ো হয়। এ সময় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে হলে ঢুকে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও হলে প্রবেশ করে ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। হলের ভেতরে শিবিরনিয়ন্ত্রিত কক্ষগুলোতে গিয়ে ভাঙচুর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা শিবিরকর্মীদের লোহার রড ও লাঠিসোঠা দিয়ে অতর্কিতভাবে পেটানো শুরু করে। একপর্যায়ে তারা রাকিব নামের এক শিবিরকর্মীর বাম পায়ে ছুরিকাঘাত করে।

সাংবাদিকরা মারধরের ছবি তুলতে গেলে তাদের বাধা দেয়া হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ক্যামেরা ভাঙচুরের হুমকি দেয়। এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে প্রায় এক ঘণ্টা তল্লাশি শেষে বিকাল তিনটার দিকে হল থেকে বের হয় পুলিশ। পরে আটক শিবিরকর্মীদের থানায় নিয়ে যায় তারা। তারা শিবির নিয়ন্ত্রিক কক্ষ থেকে পাথর, লোহার রড, শিবিরের ব্যানার, প্রকাশনাসামগ্রী ও একটি ট্রাংক উদ্ধার করে।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, “সকালে দুই শিবির নেতাকে আটকের পর নাশকতার উদ্দেশে ওই হলে অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে শিবিরকর্মীরা জড়ো হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা সেখানে তল্লাশি চালাই। এ সময় লোহার রড ও শিবিরের আপত্তিকর কিছু প্রকাশনাসহ নয়জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের এখন থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর