কয়েক কোটি আলোকবর্ষ দূরে একটি তারার দু’টি বিস্ফোরণে বিকল হতে বসেছে প্রযুক্তি!
সূর্যের মধ্যে দু’টি বিস্ফোরণে তৈরি হওয়া সৌর ঝড় ধেয়ে এসেছে পৃথিবীর দিকে। তৈরি হয়েছে এক ধরনের ‘ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক’ রশ্মি। যা কি না ইতিমধ্যেই স্পর্শ করেছে ভূপৃষ্ঠ।
কী এই সৌর ঝড়?
সূর্য আসলে হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম দিয়ে তৈরি একটি বিরাট গ্যাস বলয়। সেখানে প্রতিনিয়তই ঘটছে বিস্ফোরণ। এক একটা বড় বিস্ফোরণের শক্তি কয়েক লক্ষ হাইড্রোজেন বোমার সমান। আর সেই বোমার সমান বিস্ফোরণেই বিপদ বাড়ে পৃথিবীর। বিস্ফোরণে নির্গত রশ্মি পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটাতে পারে। সম্প্রতি নাসার তরফে জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহে সূর্যের পৃষ্ঠে এমনই দু’টি বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিজ্ঞানীরা যদিও সাধারণ মানুষকে অভয় দিয়েছেন। জানিয়েছেন, এই রশ্মি বিদ্যুৎ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বড়জোর জিপিএস বা রেডিওর কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। প্রভাব ফেলতে পারে কৃত্রিম উপগ্রহের নজরদারিতে, সমস্যা তৈরি করতে পারে বিমান চলাচলেও। এই সৌর ঝড়ে ঝুঁকি বাড়তে পারে মহাকাশচারীদের। এই ঝড় বা ‘জিওম্যাগনেটিক স্টর্মের’ কারণেই শুক্রবার এবং শনিবার রাতে মেরুজ্যোতি চোখে পড়তে পারে সুদূর উত্তর আমেরিকা এবং কানাডা থেকেও।
এ যাত্রায় রেহাই মিললেও ভবিষ্যতে এই ধরণের সৌর ঝড় যে মানবজাতির গায়েও আঘাত হানতে পারে সেই সতর্কবার্তাও দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ঝড় বিরাট আকার নিলে তা বিশেষ করে আমেরিকার উত্তরপূর্বে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে মত বিজ্ঞানীদের। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ১৮৫৯ সালে এমনই একটি সৌর ঝড়ের প্রভাব পড়েছিল পৃথিবীতে। ২০১২-তেও এমন আর একটি ঝড়ের হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিল পৃথিবী।
তবে এবারের ঝড়ের পরে কিছু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা জানাচ্ছেন, সূর্যে অবিরাম বিস্ফোরণ হচ্ছে। তার মধ্যে কোন বিস্ফোরণ পৃথিবীতে প্রলয় ডেকে আনবে তা আগে থেকে বোঝা অসম্ভব। তবে নতুন প্রযুক্তি যে খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার পথ বাতলে দেবে তা নিয়েও আশাবাদী বিজ্ঞানী মহল।– সংবাদ সংস্থা।