১৪ সেপ্টেম্বর রোববার সুইডেনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওইদিন সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ভোটাররা ভোট দেবেন। তবে ১৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হলেও ভোট দেয়া শুরু হয়েছে গত ২৮ আগস্ট থেকে। এই সময় দেশের বিভিন্ন লাইব্রেরিতে ভোট প্রধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর রাত আটটায় ভোট গ্রহণ শেষ হলেই প্রাথমিক ফলাফল স্থানীয় মিডিয়া প্রকাশ করা শুরু করবে।
প্রতিবারের মতো এবারও প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্ন দল থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভেনসটার পার্টি থেকে লিও আহমেদ স্টকহলম সিটি কাউন্সিল ও মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু স্টকহলম কাউন্টি কাউন্সিল এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে লিও আহমেদের নাম অনেক উপরে থাকাতে তিনি ইতিমধ্যেই জয়ী হয়েছেন বলে ধরা যেতে পারে। অন্যদিকে মহিবুল ইজদানী খান ডাবলুর নাম নিচে থাকাতে তার পক্ষে জয়ী হওয়া অত্যন্ত কঠিন বলা যেতে পারে। তবে ছোট রাজনৈতিক দল হওয়ার কারণে তার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। সব কিছুই নির্ভর করছে স্টকহলম প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপর। আপাত দৃষ্টিতে যতটুকু ধারণা করা যায় মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু পরাজিত হলে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হবেন। সবকিছুই নির্ভর করছে ভোটারদের ভোটের ওপর।
উপরোক্ত দুইজন প্রার্থী ছাড়াও সুইডিশ লেবার পার্টি থেকে স্টকহলম সিটি কাউন্সিলে শাশি হোসেন এবার প্রথমবারের মত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সদ্য রাজনীতিতে আগত ২৭ বছরের এই তরুণের নাম দলের প্রার্থী তালিকায় উপরে থাকার কারণে তিনি ইতিমধ্যেই জয়ী হয়েছেন বলে ধরা যেতে পারে। অন্যদিকে বাসিত চৌধুরী ও আবুল কালাম আজাদ সুইডিশ রক্ষনশীল দল মডারেট্ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের জয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। কারণ বড় দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কারণে জয়ী হতে হলে তাদের দুজনেরই প্রচুর ভোটের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া প্রায় বেশিরভাগ বহিরাগতরা দলটির প্রতি তেমন সমর্থন প্রধান করে না। আর বাংলাদেশিদের বেলায় একেবারেই নাই বললেই চলে। সেদিক দিয়ে তুলনা করলে মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু ছোট রাজনৈতিক দল সুইডিশ লেফট পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাতে রাজধানী স্টকহলমে তার খুব একটা বেশি ভোটের প্রয়োজন হবে না। তাকে জয়ী হতে হলে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় জয়ী হতে হবে যা অত্যন্ত কঠিন।
সুইডেনের রাজনীতিতে বর্তমানে দুইটি জোটের অবস্থান রয়েছে। ক্ষমতাসীন ডানপন্থী এলায়েন্স ও বামপন্থী রেড গ্রিন জোট। প্রবাসি বাংলাদেশি ভোটারসহ বেশির ভাগ বহিরাগতরা সবসময় রেড গ্রিন জোটের পক্ষে ভোট দিয়ে থাকেন। সুইডেনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পর পর দুবার ক্ষমতায় এসেছে ডানপন্থী এলায়েন্স। তবে বিভিন্ন জরিপ অনুসন্ধান রিপোর্টে ইতিমধ্যে সরকার পরিবর্তনের আভাস দেয়া হয়েছে। সবকিছুই নির্ভর করছে বহিরাগত বিরোধী রাজনৈতিক দল স্ভেরিয়া ডেমোক্রাটারনার আসনের উপর। দলটি ভালো ফলাফল করলে সরকার গঠনে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ ইতিমধ্যেই দুটি জোটই স্ভেরিয়া ডেমোক্রাটারনার সাথে জোট না করার কথা ঘোষণা করেছে। এধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে হয় মাইনরিটি সরকার নতুবা পুনরায় নির্বাচন হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিতে পারে। তবে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন বিরোধী দলের পক্ষে আশাতীত ফলাফল না হলে বর্তমান ডানপন্থী এলায়েন্স সরকার পরোক্ষভাবে স্ভেরিয়া ডেমোক্রাটারনার সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করতে পারে।
স্টকহলম কাউন্টি কাউন্সিলের সাবেক নির্বাচিত কাউন্সিলার মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু প্রবাসীর কন্ঠ ডট কম এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন ব্যক্তিগতভাবে জয়ী হওয়াটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার দল সুইডিশ লেফট পার্টি (ভেনসটার) পক্ষ থেকে জয়লাভকে বরং গুরুত্ব দিচ্ছি বেশি।