আবার ফিরলো সেই ‘কালো দিন’। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিতে বৈঠক করেছেন ওবামা। একদিকে ইরাকে আইএস নির্মূল অভিযানের প্রস্তুতি, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ রাখার চ্যালেঞ্জ। লাদেন নেই, কিন্তু আছে তার ভাবশিষ্যরা!
২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ ১৩ বছর আগের ঠিক এই দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে এক যোগে চালানো হয়েছিল চার-চারটি আত্মঘাতি বিমান হামলা। হামলায় নিহত হয় প্রায় ৩ হাজার মানুষ। চারটি মার্কিন যাত্রিবাহী বিমান ছিনতাই করে নিউ ইয়কের্র স্থানীয় সময় ৯টার দিকে চালানো হয় এই হামলা। দুটি বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ও দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে। নিমেষে ধসে পড়ে ভবন দুটি। আরেকটি বিমান নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তবে চতুর্থ বিমানটি নিয়ে জঙ্গিরা পূর্ব নির্ধারিত স্থানে হামলা চালাতে চাইলেও যাত্রীদের প্রতিরোধের মুখে সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। পেনসিলভেনিয়ার আকাশে বিধ্বস্ত হয় সেই বিমান।
পরিকল্পিতভাবে চালানো নারকীয় এ ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞের জন্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদাকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ। গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, আল-কায়েদার তখনকার নেতা ওসামা বিন লাদেনই ছিলেন হামলার রূপকার। ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে আত্মগোপন করে থাকা লাদেনকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী ‘নেভি সিল’।
লাদেনের মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে একরম বিজয়ীই ঘোষণা করেছিলেন বারাক ওবামা। তিন বছর পরও কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। এখনো বিশ্বের এখানে-ওখানে চলছে জঙ্গি হামলা।
জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদা দৃশ্যত কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও আফ্রিকায় স্কুল থেকে দুই শতাধিক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বোকো হারাম। বাণিজ্যিক বিপনীতে অতর্কিত হামলায় প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। ইরাকের বেশ বড় একটা অংশ দখল করে নিয়ে বিশ্বজুড়ে ইসলামি খেলাফত কায়েমের ঘোষণা দিচ্ছে ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিস)। আইএস-এর বিরুদ্ধেও ‘যুদ্ধ পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে।
সব মিলিয়ে নতুন এক বাতাবরণেই নাইন ইলেভেনের ১৩তম বার্ষীকিতে ৩ হাজার নিহত, অসংখ্য আহত এবং তাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি শ্রদ্ধা, সমবেদনা জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নিউ ইয়কের্র ‘দ্য ন্যাশনাল সেপ্টেম্বর ইলেভেন মেমোরিয়াল মিউজিয়াম’-এ জমবে হাজারো দর্শনার্থীর ভিড়। এবারই প্রথম ৯/১১-র বর্ষপূতির্র দিনেও খোলা থাকবে এই জাদুঘর। গত মে মাস থেকে উন্মুক্ত করে দেয়া ‘সেপ্টেম্বর ইলেভেন মেমোরিয়াল মিউজিয়াম’-এ গিয়ে এ পর্যন্ত নয় লাখেরও বেশি দর্শনার্থী ১৩ বছর আগে নিহত হওয়া মানুষের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আজ দর্শনার্থীর সংখ্যা দশ লক্ষ হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।-ডি ডব্লিউ