ডাণ্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় কঠোর পুলিশি পাহারায় মাস্টার্স পরীক্ষা দিলেন বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের মনোবিজ্ঞানের ছাত্র নজরুল ইসলাম জনি। গত শনিবার এ ঘটনায় স্তম্ভিত তার সহপাঠী ও পরিচিতজনরা। অথচ ইয়াবা পাওয়ার মিথ্যা অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। রোববার এ বিষয়ে র্যাবের সদর দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন জনির স্ত্রী ফারজানা ববি। এতে জনিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। জনি বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জপাড়ার ময়েজ উদ্দিন বুলু মণ্ডলের ছেলে।
জনির স্ত্রী ফারজানা ববির স্বাক্ষর করা লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, র্যাব-১২ বগুড়া স্পেশাল কোম্পানির সদস্যরা গত ৩০ আগস্ট রাতে শহরের সুলতানগঞ্জপাড়ার বাসা থেকে নজরুল ইসলাম জনিকে ধরে নিয়ে যায়। ওই রাতে র্যাব একবার বাসায় এসে তল্লাশি চালিয়ে কিছু না পেয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার এসে বালিশের মধ্যে ৪৯ পিস ইয়াবা পাওয়ার কথা বলে। পরিবারের অভিযোগ, র্যাবের এএসপি মশিউর রহমান শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ইউসুফ আলীর ষড়যন্ত্রের কারণে জনিকে গ্রেফতার এবং রাতে প্রচণ্ড মারধর ও নির্যাতন করেন।
এদিকে পরদিন জনিকে আদালতে হাজির করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস ওয়াহিদ জনির মুখ থেকে নির্যাতনের বর্ণনা শুনে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া আদালত শারীরিক নির্যাতন বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর আদালতকে জানাতে বগুড়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারকে (এ-সার্কেল) নির্দেশ দেন।এদিকে জেলা ও দায়রা জজ সঠিকভাবে জনির পরীক্ষা গ্রহণে বগুড়ার পুলিশ সুপার, জেল সুপার ও সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষকে নির্দেশ দেন। শনিবার সকালে জনিকে পুলিশ ডাণ্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাফ পরিহিত অবস্থায় কলেজে নিয়ে যায়। এতে সেখানে সহপাঠী ও অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
বগুড়া কারাগারের জেলার বজলুর রশিদ জানান, কোনো হাজতি বা কয়েদিকে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো তাদের সিদ্ধান্তে হয় না। পুলিশের চাহিদা অনুসারে এ কাজ করা হয়।র্যাব-১২ বগুড়া স্পেশাল কোম্পানির এএসপি মশিউর রহমান নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার কাছে ইয়াবা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।