যুবদলের দুই পক্ষের মারামারিতে পণ্ড হয়ে গেছে ‘ঢাকা চল’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ষোলশহর এলাকার উডল্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারে এই সভার আয়োজন ছিল।
মারামারির কারণে সভায় বক্তৃতা না দিয়েই বেরিয়ে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি সাংসদ জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান জুয়েলসহ অন্যান্য নেতারা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের কমিটি ঘোষণা নিয়েই এ মারামারির ঘটনা ঘটে। কিছু দিন আগে এ নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এ নিয়ে পুরনো কমিটির নেতাদের সঙ্গে নতুন কমিটির নেতাদের রেশারেশি চলছিল।
এর জের ধরে ষোলশগর স্টেশন সংলগ্ন ওই কমিউনিটি সেন্টারে দুই পক্ষ লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী বিএনপিকর্মী ও নেতারা জানিয়েছেন।
সংঘর্ষে দুই পক্ষের আট থেকে ১০ জন যুবদল নেতাকর্মী আহত হন।
দুপুর আড়াইটার দিকে দুই পক্ষ সাংবাদিকসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তখন সভামঞ্চে এম কে আনোয়ার ও জাফরুল দুজনই ছিলেন। এক পর্যায়ে দুজনই কমিউনিটি সেন্টার থেকে বেরিয়ে একটি গাড়িতে করে চলে যান।
দুই দফায় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর যুবদলের একটি অংশ অন্য অংশের নেতাকর্মীদের মারধর করে কমিউনিটি সেন্টার থেকে বের করে দেয়।
যুবদল কর্মীরা জানায়, বদরুল খায়েরকে সভাপতি ও মো. শাহজাহানকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ জেলা যুবদলের কমিটি ঘোষণা করা হয় কিছুদিন আগে। এদের সমর্থন দিচ্ছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান জুয়েল ও আনোয়ারার সাবেক সংসদ সদস্য সারোয়ার জামাল নিজাম।
কেন্দ্রঘোষিত কমিটির বিরোধিতা শুরু থেকেই করছে সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং পটিয়া উপজেলার খরণার ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুল আহমদ ও তার অনুসারীরা। এদের সমর্থনে আছে দক্ষিণ জেলার সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী।
যুবদল নেতা মফিজুলের অনুসারীরা অন্য পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে সমাবেশস্থলের বাইরে বের করে দেয়। পরে দক্ষিণ জেলার নির্ধারিত সভা না হয়ে যুবদলের একাংশের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পাঁচলাইশ থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, যুবদলের দুই পক্ষ মারামারি করেছিল। পুলিশ গিয়ে তাদের থামায়।
তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
তবে গাজী শাহজাহান জুয়েল বলেন, যুবদলের কমিটি কোনো বিষয় নয়, কিছু সুযোগসন্ধানী লোক সমাবেশ বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সমাবেশ পণ্ড হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, “উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা সভা না করে চলে আসি।”
আগামী ১২ মার্চ ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ হবে, যাতে সারাদেশ থেকে নেতা-কর্মী-সমর্থকরা যোগ দেবেন। চট্টগ্রামে অবস্থান করে এই সমাবেশের প্রচার চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার।
সকালে তিনি বোয়ালখালীতে প্রচার চালাতে যান ওই এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানকে নিয়ে। সেখানে বিক্ষুব্ধ একদল কর্মী তাদের গাড়িতে ঢিল ছোড়ে বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে।
তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, মোরশেদ খানের গাড়িতে হামলায় আওয়ামী লীগের ইন্ধন রয়েছে।