রাজনৈতিক সঙ্কটের অবসানে সংলাপের উদ্যোগ নিতে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতি বিভিন্ন মহলের আহ্বানের মধ্যে আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বললেন, আলোচনার উপযুক্ত স্থান হচ্ছে সংসদ।
শুক্রবার ডিপ্লোম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “অনেকে বলেন, দুই নেত্রী কেন একত্রে বসেন না? আমি বলি, সংসদই দুই নেত্রীর একত্রে বসার স্থান।
“আপনারা লক্ষ্য করবেন, সংসদে সংসদ নেতা যেখানে বসেন, তার একেবারে বিপরীত পাশেই বিরোধীদলীয় নেতা মুখোমুখি হয়ে বসেন।”
তত্ত্বাবধায় সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিপরীত অবস্থানে রয়েছে। আগামী নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দুই দলকে সংলাপে বসতে দেশের বিভিন্ন মহলের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও বলে আসছেন।
বিরোধী দলকে উদ্দেশ্য করে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “নেতিবাচক রাজনীতি ত্যাগ করে সংসদে আসুন। আমরা একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে সংসদে বসেই আলোচনা করি।”
বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে বাংলাদেশেও নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কামরুল বলেন, “আসলে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে। ওয়ান-ইলেভেন থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাইকে নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে ইতিবাচক রাজনীতিতে আসতে হবে।”
বর্তমান সরকারের সফলতার কথা উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, গত তিন বছরে সরকারের সবচেয়ে বেশি সফলতা শিক্ষাক্ষেত্রে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানা সমিতির উদ্যোগে কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কামরুল।
শিক্ষা খাতে সরকার পুরোপুরি সফল দাবি করে তিনি বলেন, অতীতে একটা ছাত্রের এসএসসিতে গিয়ে মেধা যাচাই হতো। এখন পঞ্চম, অষ্টম শ্রেণীতেও মেধা যাচাই হচ্ছে। এখন কোনো শিক্ষার্থী বলতে পারবে না যে বছরের প্রথম দিন তাদের হাতে বই পৌছেনি।
দেশের বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে এটাও সরকারের সাফল্য বলে দাবি করেন কামরুল। তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে সরকারের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
কামরুল বলেন, “আমার ৫ বছরের নাতনী এখন কম্পিউটার-ল্যাপটপ নিয়ে খেলা করতে পারছে। এ বিষয়ে তারা দক্ষ হয়ে উঠছে।”
“একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওইদিন জব ফেয়ারে গেলাম। চাকরির জন্য এখন জব ফেয়ারও হচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংক ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে বহু শিক্ষার্থী যেভাবে এখন চাকরি পাচ্ছে, অতীতে সেভাবে পাওয়া যেত না,” বলেন তিনি।
সরাইল থানা সমিতির ওই অনুষ্ঠানে সমিতির যুগ্ম সম্পাদক হোসাইন আহমেদ তাফসীর প্রতিমন্ত্রীকে সরাইলের কৃতি সন্তান হিসাবে বার বার ঘোষণা দিলেও বক্তব্যে কামরুল বলেন, তার জন্ম ঢাকায়, বড় হয়েছেনও ঢাকায়। তার পূর্ব পুরুষের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলায়। তবে সরাইলে তার আত্মীয় স্বজন রয়েছে।
“যতই নিজেকে ঢাকাইয়া বলে পরিচয় দিই, এরপরও আমি নাড়ির টান অনুভব করি। আর ঢাকাইয়ারাও আমাকে আমাকে আসল ঢাকাইয়া হিসাবে পুরোপুরি স্বীকার করতে চায় না,” বলেন ঢাকার এই সংসদ সদস্য।
অনুষ্ঠানে এ কে এম হেদায়েতুল হককে সভাপতি এবং এ কে এম ইকবাল আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত সমিতির নতুন কমিটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।